হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা পুতুলকে স্বাগত জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে যে, আসন্ন ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী তনয়া সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নাকি প্রার্থী হচ্ছেন। দলীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে যে, এমন কোনো বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সম্ভাবনার কথা আলোচিত হয়নি। তাছাড়া দলীয় প্রার্থীতার জন্য মনোয়নপত্রও তোলা হয়নি তার নামে।
ফেসবুকে এরইমধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে যে ঢাকা-১৮ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মৃত্যুর পর শূন্য আসনটিতে অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। এর পর পরই এ তথ্যের যথার্থতা যাচাই না করেই বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ স্যোশাল মিডিয়ায় করা পোস্টে অভিনন্দন বার্তা জানাতে থাকেন। আকস্মিক এই ঘটনার মূল সত্যতা সম্পর্কে জানতে দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায় যে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কোনো আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বলে যে তথ্য ছড়ানো হয়েছে তা মূলত একটি গুজব।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে কেউ এখন পর্যন্ত মনোনয়ন ফরমই ক্রয় করেনি। তাছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা হলো মনোনয়ন বোর্ডের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই মনোনয়ন বোর্ডের সভার এখনো তারিখই নির্ধারিত হয়নি।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবসময় প্রত্যাশা করে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্মের যারা আছেন তারা রাজনীতিতে আসুক। কিন্তু এই অতিউৎসাহ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এক্ষেত্রে সকল নেতাকর্মীকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
তাছাড়া একটি বিশেষ সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কিংবা সজীব ওয়াজেদ জয়ও সরাসরি রাজনীতিতে আসা বা নির্বাচনের ব্যাপারে কোন ঘোষণা দেননি। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর নির্দেশনাই দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ে কার্যপ্রণালী নির্ধারণে একমাত্র দিক নির্দেশনা, এক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না।
প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জ-১, নওগাঁ-৬, পাবনা-৪, ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সোমবার থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। চলবে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত। এই ৫টি আসনে যে উপনির্বাচন হচ্ছে, সেই ৫টি আসনের জন্য সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পক্ষ থেকে কোন মনোনয়নপত্র কেনা হয়নি। কোন একটি মহল একেবারেই অবান্তরভাবে অথবা হয়তো না বুঝেই এ ধরণের গুজব ছড়াচ্ছে। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল জাতীয় এবং আন্তর্জাআতিক প্রেক্ষাপটে একজন গূরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাই এমন আচরণ মোটেই প্রত্যাশিত নয় বলে জানান অনেকে।
জানা যায়, যে ছবিটি দিয়ে এই তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, সেটি সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা নিযুক্ত হয়েছিলেন সেই সময় তাকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছিল, সেই অভিনন্দন বার্তাটি গণভবনে তাঁর হাতে তুলে দেন ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সেই পুরনো ছবিটি দিয়ে এই প্রচারটা করা হচ্ছে। বাস্তবে মনোনয়নের ব্যাপারে এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।