নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে এক লন্ডন প্রবাসীর ৪টি দামী গাড়ী ও নগদ টাকাসহ চম্পট দিয়েছে কেয়ার টেকার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দিনারপুর অঞ্চলের গজনাইপুর গ্রামে। এ ঘটনা জানাজানির পর দিনারপুর জুড়ে তোলপাড় চলছে। প্রতারণার শিকার প্রবাসী নূর মিয়া ওরফে ইকবাল বাদী হয়ে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আমল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলো- গজনাইপুর গ্রামের সৈয়দ উল্লার পুত্র প্রবাসীর বাড়ীর কেয়ার টেকার মোঃ ইয়াহিয়া ও আফজাল মিয়া।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গজনাইপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল্লাহ‘র পুত্র নূর মিয়া ওরপে ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করে আসছেন। তিনি লন্ডনে থাকায় তার পারিবারিক ও ব্যবসা সংক্রান্ত কাজের জন্য একই গ্রামের মোঃ ইয়াহিয়াকে কেয়ার টেকার নিযুক্ত করেন। প্রবাসী ইকবাল সরল মনে বিশ্বাস করে ইয়াহিয়ার কাছে বিভিন্ন সময়ে কয়েক কোটি টাকা প্রেরণ করেছেন। এমন কি ইকবালের ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মডেলের মাইক্রোবাস সহ ৪টি গাড়ীও কেয়ার টেকার ইয়াহিয়ার কাছে ছিল। বিগত ৫ বছর যাবত সে গাড়ীর ভাড়া নিয়মিত সংগ্রহ করে তার কাছে জমা রাখতো। কিন্তু ইদানিং ইয়াহিয়ার কাছে টাকার হিসাব চাইলে সে সঠিক মতো হিসাব দিতে পারেনি। এক পর্যায়ে ইয়াহিয়ার আচার আচরণে প্রবাসী ইকবালের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে কেয়ার টেকারের দায়িত্বে থাকা ৪টি গাড়ী ফেরত চাইলে সে ‘নয়-ছয়’ কথা বলে। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়- সিলেট শহরে ওই প্রবাসীর মালিকানাধীন এক্সেল টাওয়ারের বিভিন্ন কাজ এবং ভাড়াটিয়ার নিকট থেকে ভাড়া আদায় করে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ইয়াহিয়ার কাছে জমা ছিল। এমনকি প্রবাসী ইকবালকে না জানিয়ে তার ভাই আফজাল মিয়ার ইন্ধনে ইকবালের জমি ওই এলাকার ৪ জনের নিকট ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে বন্ধক দেয় ইয়াহিয়া। এদিকে গত সোমবার রাত ১২ টার দিকে প্রবাসীর ঘরে থাকা নগদ ৪ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায় ইয়াহিয়া। এর আগেই গাড়ীগুলোও বাড়ীতে না রেখে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে সে সম্প্রতি দেশে এসে প্রবাসী নূর মিয়া ওরপে ইকবাল বিভিন্ন ভাবে অনুসন্ধান করে ইয়াহিয়ার কোন হদিস না পেয়ে এলাকার মুরুব্বীয়ানদের বিষয়টি অবহিত করেন। তারাও ইয়াহিয়া’র কোন খোঁজ না পাওয়ায় এবং এ ঘটনার সুষ্টু সমাধান করতে না পারায় প্রবাসী নূর মিয়া ওরফে ইকবাল বাদী হয়ে রবিবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আমল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এছাড়া প্রতারণার শিকার প্রবাসী হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে দরখাস্ত করেছেন।