নুর উদ্দিন সুমন ॥ সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার খ্যাত হবিগঞ্জের মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় অলিপুর পুলিশ ক্যাম্প চালুর পর থেকে বদলে গেছে মহাসড়ক ও শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ক্যাম্প উদ্বোধনের এক সপ্তাহের মধ্যেই এলাকায় এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন।
স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অলিপুর অংশ দীর্ঘদিন যানজটের কারণে সাধারণ মানুষ ও পরিবহন ব্যবসায়ীদের ভোগান্তির কারণ ছিল। কিন্তু ক্যাম্প উদ্বোধনের পরদিন থেকেই হাইওয়ে পুলিশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে এ মহাসড়ক। এখন আর অলিপুরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় না যাত্রী ও পরিবহন চালকদের।
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ওসি শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, তিন পালায় ২৪ ঘণ্টা চেকপোস্ট কার্যক্রম চালাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। এতে যেমন চোরাচালান ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। জুলাই মাসে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা প্রসিকিউশন দিয়েছিল ১০৭টি। আগস্টে (ক্যাম্প উদ্বোধনের পর) সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৯-এ। শুধু তাই নয় ক্যাম্প উদ্বোধনের পর শ্রমিকরা নিরাপদ, ছিনতাই বন্ধ হয়েছে। শুধু মহাসড়কই নয়, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ক্যাম্প চালুর পর থেকে নিরাপদ হয়েছে শিল্পাঞ্চলও। প্রাণ-আরএফএল, বাদশা গ্রুপ, স্কয়ার ড্যানিং, যমুনা গ্রুপসহ অন্তত এক ডজন বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এ দুই উপজেলায়। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় পঞ্চাশ হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
শ্রমকি সাহিদুল ইসলাম বলেন, আগে মাস শেষে আমাদের শ্রমিকরা বেতন নিয়ে ফিরতে গিয়ে ছিনতাইকারীর কবলে পড়তেন। বর্তমানে সে আশঙ্কা একেবারেই নেই। শিল্প মালিকরাও নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন। অলিপুর এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর এলাকায় শৃঙ্খলা ফিরেছে। যানজট ও ছিনতাই কমে যাওয়ায় তারা স্বস্তি পাচ্ছেন। ব্যবসায়ী রতন জানান- আমরা বহুদিন ধরে এখানে পুলিশের স্থায়ী ক্যাম্প চেয়েছি। অবশেষে তা বাস্তবায়ন হওয়ায় এখন সবাই স্বস্তিতে আছি।
হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন- অলিপুর সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী ও শত শত পণ্যবাহী ট্রাক এই মহাসড়ক ব্যবহার করে। মহাসড়ক ও শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই ক্যাম্প ছিল সময়ের দাবি। উদ্বোধনের পর থেকে ইতিবাচক ফল পাচ্ছি। যানজট কমেছে, চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে এসেছে, প্রসিকিউশন বেড়েছে এবং শ্রমিকরাও নিরাপদ বোধ করছেন। স্থানীয় জনগণ আমাদের সহযোগিতা করছে, যা প্রশংসনীয়।