
স্টাফ রিপোর্টার || হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকপাড়া এলাকায় বাস থামিয়ে ফিল্মি স্টাইলে অপহরণ করে নির্যাতন ও এর ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সদর মডেল থানায়, অপহৃত নাছিমার ভাই মেঃ সালেক মিয়া বাদী হয়ে কাউছার, রুহুল আমিন, সফিক মিয়া, সুহেল মিয়া, সোহাগ মিয়া, রসিদ মিয়া, লুবনা বেগম, রিনা আক্তার, সাহেদা আক্তার, মিনা আক্তার, পান্না আক্তারসহ ১১ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ মঙ্গলবার গভীর রাতে আসামীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মৃত লতিফ গেদার পুত্র কাউছার মিয়া (৩৫), তার ভাই রুহুল আমিন (৩৯) ও সফিক মিয়ার পুত্র সোহাগ মিয়া (২০), এ ছাড়া অন্য মামলায় আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করে। তারা হল, নাজির মিয়া, সাজিদ মিয়া ও আজিজ মিয়া। বুধবার তাদেরকে হবিগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাঁকন দে অসীম এর আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জিএম শাহীন।
বাদী সালেক মিয়া জানান, হবিগঞ্জ কোর্টে নারী নির্যাতন মামলা করার কারণে গত সোমবার আমি আমার-বোন নাছিমা আক্তারকে নিয়ে হবিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি লোকাল বাসযোগে মাধবপুর বাড়িতে যাওয়ার পথে পাইকপাড়া নামক ¯’ানে রিনা আক্তার, তার মেয়ে মিনা আক্তার, পান্না আক্তার, ভাইয়ের স্ত্রী সাহেদা ও লুবনা আক্তার যাত্রীবেশে গাড়ীতে উঠে নাছিমা আক্তারকে জোরপূর্বক মারপিট করে গাড়ি থেকে নামিয়ে টানা হেচড়া শুরু করে। পরবর্তীতে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় কে বা কারা কারা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে উল্লেখিতদের আসামি করে থানায় মামলা করেন।
জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের হরিতলা গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর কন্যা নাছিমা আক্তার (২২) কে সদর উপজেলার রতনপুর গ্রামের গেদা মিয়ার পুত্র কাউছার মিয়া ৩ বছর আগে বিয়ে করেন। কাউছার পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে নাছিমাকে যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে মারধোরসহ নির্যাতন করতো। সম্প্রতি নাছিমাকে যৌতুকের জন্য মারধোর করে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয় কাউছার ও তার বোন-ভাগ্নী মিলে। এ ঘটনায় নাছিমা বাদি হয়ে কোর্টে নারী নির্যাতন মামলা করার কারণেই তারা তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম সাহাবউদ্দিন শাহীন জানান, ঘটনা শুনার পরপরই পুলিশ পাঠিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসার ব্যব¯’া করি। অপহৃত নাছিমার ভাই সালেক মিয়ার নিকট থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরেই আসামীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং আদালতে প্রেরণ করা হয়।