বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নারী পুরুষ সহ অর্ধ-শতাধিক লোক আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় ওই এলাকার শঙ্খমহল গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহতাবস্থায় উভয়পক্ষের ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জলসুখা গ্রামে আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জহুর হোসেন ও জলসুখা ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি সলিম উল্লাহ’র সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধের জের ধরে মাস খানেক আগেও তাদের লোকজনের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যদিও পরে বিষয়টি স্থানীয় সালিশ-বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ থেকে যায়। এদিকে আওয়ামী লীগ জলসুখা ইউনিয়নের সহ-সভাপতি জহুর হোসেন, জামায়াত নেতা ডাঃ রেজাউল করিম ও আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন মেম্বার অর্থাৎ তিন গোষ্ঠীর লোকজন একত্রিত হয়ে সোমবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদ খেলুর গোষ্ঠীর কিছু লোককে ধাওয়া করে। ওই সময় এক নারীকে মারধোর ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠে। এরই জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত অর্ধ-শতাধিক লোক আহত হয়। আহতদের মধ্যে সাইকুল বেগম (৫০), জিয়াউর রহমান (৩৫), তকদির মিয়া (৪২), ইমন (২২), নাইম মিয়া (২৪), শামিম মিয়া (১৯), মছদ উল্লা (৬০), জয় (২০), মসকুদ উল্লা (৫০), আলী নুর (১৪), ফয়সল (১৪) ও অনু মিয়াকে (৪০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ সলিমুল্লা, মোঃ করিম মিয়া, মোঃ লিবাছ মিয়া, মোঃ ফাহিম খাঁন ও মন্নাফ মেম্বারের বাড়িঘর সহ প্রায় ১০-১৫টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
সরেজমিনে হামলা ভাংচুরের শিকার হয়ে অনেককেই বিলাপ করতে দেখা গেছে। এদিকে খবর পেয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। তবে স্থানীয় লোকজন যে কোন মূহূর্তে ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন।