স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নির্মলেন্দু দাশ রানাকে (৪৭) গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ৯টার দিকে সিলেট নগরীর ব্যস্ততম রিকাবীবাজার এলাকার ফাতেমা রেস্টুরেন্ট থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময়ে রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানা এবং বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জীবন। এ সময় উপস্থিত ছাত্রজনতার মধ্যে নবীগঞ্জের সাবেক আরো ২/৩ জন ছাত্রনেতা নির্মলেন্দু দাশ রানাকে চিনে ফেলেন। তারা তাকে পাকড়াও করে আটক করার চেষ্টা করলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আবুল হোসেন জীবন প্রাণপণ চেষ্টা করে রানাকে ছাত্রদের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতা তাকে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারপিট করে। খবর পেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের লামাবাজার ফাঁড়ির এসআই আলী হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল দল দ্রত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্মলেন্দু দাশ রানাকে উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে নেয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় জামায়াতে ইসলামীর একটি মিছিলে হামলার অভিযোগে নির্মলেন্দু দাশ রানাকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের আরও ২৬ নেতার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদর ইউনিয়ন সভাপতি শাহ মো. আলাউদ্দিন। মামলার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন রানা। পরে মামলার আপোষে মোটা অঙ্কের লেনদেনের গুঞ্জনের পর জামায়াত নেতা আলাউদ্দিনকে বহিষ্কার করা হয়। সম্প্রতি ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগে নির্মলেন্দু দাশ রানার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের হয়।
নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানাকে সিলেটে বিক্ষুব্ধ জনতা আটক করে পুলিশে দিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য খোঁজ খবর নিচ্ছি।
এদিকে ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানাকে আটকের একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে।