স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভূমিকম্পের বৃত্তে যেন আটকে পড়েছে বাংলাদেশ। সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারো ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫২ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে ভূমিকম্পের মাত্রা বেশি না হলেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে নগর থেকে গ্রামে। মায়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের কথাই বার বার মনে করাচ্ছে এমন ছোট ছোট ভূমিকম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্র সূত্রও ভূমিকম্পের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আর ইউরোপিয়ান-মেডিটেরানিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৬৮ কিলোমিটার উত্তর এবং ভারতের আগরতলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার উত্তরে।
ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাঈয়্যাৎ কবীর বলেন, এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের কাছে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত এলাকায়। এটি স্বল্পমাত্রা থেকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে গণ্য হয়।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের কাছে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত এলাকায়।
ভূমিকম্পে সারাদেশ থেকে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্পের সময় অনেকে টের পাননি। এর ফলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে কম। যারা বুঝতে পেরেছেন, তাদের অনেকেই দৌঁড়ে বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে যান নিরাপদ জায়গায়।
একই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভূমিকম্প নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্পের এ প্রবণতা আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের জন্য। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা অঞ্চল উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এর আগে গত ২৮ মার্চ দুপুরে বাংলাদেশে দুদফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। প্রথমবার ১২টা ২০ মিনিটে ৭.৭ মাত্রার রিখটার স্কেলে এবং দ্বিতীয়বার ১২টা ৩২ মিনিটে ৬.৪ মাত্রার রিখটার স্কেলে অনভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ে।
এদিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো মিয়ানমারও। শুক্রবার ফের ৪ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দেশটি। ভারতের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির (এনসিএস) বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। দেশটিতে কয়েক দিন আগেই ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। যার আঘাত এখনো সামলে উঠতে পারেনি স্থানীয় বাসিন্দারা।
গত ২৮ মার্চ (শুক্রবার) মিয়ানমারে পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়। এতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা কেঁপে ওঠে। ওই দিন প্রথম ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৭। পরে ১২ মিনিটের ব্যবধানে আরেকটি ভূমিকম্প হয়, যার মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৪। শক্তিশালী ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারে মান্দালয়ের সাগাইং শহরের কাছাকাছি। ওই ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিয়ানমারে ৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com