
ট্রাকগুলো উদ্ধার করেছে পুলিশ ॥ ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর বালু বৈধভাবে মহাসড়কের সিক্সলেনে কাজে বরাদ্দ দেওয়ার সময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল হকের নেতৃত্বে একদল লোক ৭টি বালু ভর্তি ট্রাক আটক করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে গতকাল সকালে ৭ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় এজাহার দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু ভর্তি ট্রাকগুলো উদ্ধার করেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজে বৈধভাবে বালু সরবরাহের কাজে একটি পক্ষ গতকাল রবিবার সকালে বাঁধা প্রদান করে।
জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেন উন্নয়ন কাজের জন্য বালু বরাদ্দ করার জন্য মা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ থেকে কুশিয়ারা নদীর বালু উত্তোলন করে মহাসড়কের নবীগঞ্জ এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।
সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি বাইপাস মহাসড়ক দিয়ে বালু ভর্তি ট্রাক নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার মহাসড়কে আসার সময় বাঁধা প্রদান করেন অভিযুক্তরা। তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো: সাঈদ আলী নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন যাবৎ সাসেক প্রজেক্টের এশিয়ান হাইওয়ে সিক্স লাইনের উন্নয়ন প্রকল্পে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সরবরাহ করছেন। বিবাদীগণ দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন লোকজনের সূত্রে আমাদের নিকট ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। বিবাদীদেরকে টাকা না দিলে আমাদেরকে বালু উত্তোলনের ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। বিবাদীদের হুমকির কারণে আমাদের ড্রাম ট্রাক বালুর গাড়িগুলো নিরাপদে রাস্তাঘাটে চলতে পারছে না।
মামলার অভিযোগে বলা হয়- ২ ফেব্রুয়ারি সকাল অনুমান ৮টায় রানীগঞ্জ হতে বালু ভর্তি ড্রাম ট্রাকগুলো বালু উত্তলন করে আসার সময় নবীগঞ্জ থানার ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের মুচি বাড়ির ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তার উপর পৌছলে ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল হকের নেতৃত্বে ৬/৭ জন গাড়ির গতিরোধ করে। তার সাথে ছিলো মোঃ জগলু মিয়া (৩৬), পিতা- কাদির মিয়া, গ্রাম স্বস্তিপুর, মো: মুকিদ মিয়া (৩৮), পিতা- আব্দুল মুক্তার, সাং- কামারগাঁও, রউফ মিয়া (৪০), পিতা- আব্দুল হাকিম, সাং- বহরমপুর, শিপন মিয়া (৪৩), পিতা- অজ্ঞাত, সাং- কামারগাঁও, ও জয়নাল মিয়া (৪০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং- নগর কান্দি, ৪নং দীঘলবাক ইউ/পি, থানা নবীগঞ্জ, জেলা- হবিগঞ্জসহ ৭/৮ জন। তারা গাড়িগুলো আটক করে চালকদের গাড়ি হতে নামিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। তারা প্রাথমিকভাবে আহত হয়। এসময় আসামীরা বাদীকে ফোন করে বলে তাদের দাবীকৃত ১০ লাখক্ষ টাকা না দিলে বালু বোঝাই করা ড্রাম ট্রাক গুলো আটক করে রাখবে। এসময় বালু ভর্তি গাড়ি গুলো ভাংচুর করে। বর্তমানে গাড়িগুলো বিবাদীদের নিকট আটক রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। টাকা না দিলে গাড়িগুলো না দেওয়ার হুমকি দিয়াছে। বিবাদী আব্দুল হক ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল। ৩ ও ৪নং আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে দীঘলবাক ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল হক বলেন, তিনি কোন চাঁদাবাজির জন্য গাড়ি আটক করেননি। ওভারলোড গাড়ি সড়ক নষ্ট করছে তাই এগুলো আটক করা হয়েছে।
এদিকে মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মতিউর রহমান বলেন, আমি বৈধভাবে মহাসড়কের সিক্স লেন এর কাজে বালু দিচ্ছি, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বালু গাড়ি আটক করে চাঁদাদাবি করে আসছে। আজকে সকালে আমার ৭/১০টি বালু ভর্তি গাড়ি আটক করে চাঁদাদাবি করলে আমার ম্যানেজার নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন বলেন, আমি এই বিষয়ে ৭জনের বিরুদ্ধে লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। চাঁদা দাবির সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।