হবিগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে আওয়ামী লীগ নেতাদের গুলিতে রিপন শীল নিহত হওয়ার ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহত রিপন শীলের মা রুবি রাণী শীল বাদি হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ওসি নূর আলম জানান, মামলাটি এফআইআর করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত উক্ত মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত ৪ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে হবিগঞ্জে মিছিল বের করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মিছিলটি তিনকোণা পুকুরপাড় এলাকায় পৌঁছলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামন থেকে গুলি ছুড়েন। এ সময় সংঘর্ষ বাঁধলে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। নেতাকর্মীদের একটি অংশ তৎকালীন সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আবু জাহিরের বাসায় আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তারা থেমে থেমে গুলি ছুড়তে থাকেন। এ সময় গুলিতে রিপন শীল নামে একজন মারা যান। উক্ত ঘটনায় বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলায় যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারা হলেন- হবিগঞ্জ শহরের টাউন হল রোড আবাসিক এলাকার বাসিন্দা হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির, বানিয়াচং উপজেলার ১৩নং মন্দরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হক, হবিগঞ্জ পৌরসভার পুরাতন খোয়াইমুখ রোড এলাকার বাসিন্দা সুবিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমির আলী চৌধুরীর পুত্র জেলা যুবলীগ সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, শহরের দেয়ানত রাম সাহার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা রইছ মিয়ার পুত্র হবিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ শহরের কালীগাছতলা এলাকার বাসিন্দা মৃত মোক্তার মিয়ার ছেলে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. আতাউর রহমান সেলিম, শহরের নিউ মুসলিম কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা মৃত শাহজাহান চৌধুরীর পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, উমেদনগর পূর্ব হাটির মৃত আব্দুল আলীর পুত্র আব্দুল হান্নান, উমেদনগরের মৃত কুতুব মিয়ার পুত্র আলাই চৌধুরী, হবিগঞ্জ শহরতলীর রিচি গ্রামের নূর মিয়ার পুত্র মহসিন মিয়া, বানিয়াচং উপজেলার নোয়া পাথারিয়া গ্রামের মৃত ইছাক আলী প্রকাশিত ডেঙ্গু মিয়ার পুত্র মক্রমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ, শহরতলীর বহুলা গ্রামের ইনছাফ আলীর পুত্র আজিজুর রহমান সজল, একই গ্রামের ছালেহ আহমেদের পুত্র রনি আহমেদ, বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে শহরের উত্তর শ্যামলী আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী কিম্মত আলীর পুত্র জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী, বানিয়াচং উত্তর তোপখানা এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম খানের পুত্র আসাদুজ্জামান খান তুহিন, শহরের নাতিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা মৃত খয়ের উদ্দিন চৌধুরীর পুত্র জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সুমন, রিচি গ্রামের মৃত আমির আলীর পুত্র বদরুল আলম, শায়েস্তাগঞ্জ দক্ষিণ বড়চর (তালুগড়াই) এর বাসিন্দা মৃত চান্দু মিয়ার পুত্র সাবেক পৌর মেয়র ছালেক মিয়া, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মৃত নিম্বর আলী তালুকদারের পুত্র উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন তালুকদার, হবিগঞ্জ শহরের খাদ্যগুদাম রোড এলাকার বাসিন্দা মৃত আকল মিয়ার পুত্র কাউন্সিলর জাহির মিয়া ওরফে জাহির উদ্দিন, শরীফপুর গ্রামের আব্দুল জলিল মেম, আব্দাবকাই গ্রামের মৃত ইছাক মিয়ার পুত্র লস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান হিরু, শহরের চৌধুরী বাজার এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের পুত্র জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডুরা গ্রামের মৃত ভিংরাজ মিয়ার পুত্র আদিল হোসেন জজ মিয়া, বানিয়াচং উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন খান, মক্রমপুর ইউনিয়নের নোয়া পাথারিয়া গ্রামের আশিক মিয়ার পুত্র ডিপজল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সেবুল মিয়া, হবিগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গৌতম কুমার রায়, শহরের কালীবাড়ি ক্রসরোড এলাকার বাসিন্দা শংখ শুভ্র রায়, একই এলাকার বাসিন্দা সুদিপ রায়, শহরের কোর্ট স্টেশন রোড এলাকার বাসিন্দা মৃত আবুল কাশেমের পুত্র মোস্তফা কামাল সংগ্রাম, বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের নোয়া পাথারিয়া গ্রামের মৃত ডেঙ্গু মিয়ার পুত্র আশিক মিয়া, শহরের মোহনপুর এলাকার আশরাফ আহমেদ হারুন, হবিগঞ্জ শহরতলীর নছরতপুর গ্রামের মৃত দরবেশ আলীর পুত্র হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান শামীম, শহরের অনন্তপুর এলাকার আব্দুল মালেকের পুত্র মিজানুর রহমান আরিফ, শহরতলীর রিচি গ্রামের মৃত মুছদ্দর আলীর পুত্র জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান, শহরের উমেদনগরের মৃত হাজী মর্তুজ আলী ওরফে লুদাই মিয়ার পুত্র সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, মাধবপুর বাজারের মৃত হিমাংশু সাহার পুত্র পঙ্কজ সাহা, হবিগঞ্জ শহরের ফায়ার সার্ভিস রোড এলাকার মৃত আব্দুল মোছাব্বির চৌধুরীর পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, শহরের নাতিরাবাদ এলাকার মৃত খয়ের উদ্দিন চৌধুরীর পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বুলবুল আহমেদ চৌধুরী, শহরের খোয়াইমুখ রোড এলাকার মৃত শামছুল হক উমদা মিয়ার পুত্র ফরহাদ হোসেন কলি, শহরের টাউন হল রোড এলাকার আবু জাহিরের পুত্র রিফাত জামিল, শহরের শায়েস্তানগরের মৃত আব্দুল বারিকের পুত্র বাবুল মিয়া, কালীগাছতলা এলাকার মৃত মোক্তার মিয়ার পুত্র শাহীন মিয়া, রিচি গ্রামের মৃত আলতাফ মিয়ার পুত্র আব্দুর রহমান, কলেজ রোড এলাকার মৃত আব্দুল জব্বার মিয়ার পুত্র আব্দুর রহমান, শায়েস্তানগরের মৃত সুন্দর আলীর পুত্র রাজু আলী সুমন, কাশিপুরের শাহ ইদ্রিছ মিয়ার পুত্র শাহ জানে আলম জনি, শহরতলীর বড়বহুলার বুলবুল মিয়ার পুত্র নাজমুল হুদা বাদশা, তেঘরিয়া আবাসিক এলাকার মৃত বাবুল মিয়ার পুত্র আলী আশরাফ মামুন, বড় বহুলার মৃত দিদার হোসেনের পুত্র এমদাদুর রহমান সোহেল, অনন্তপুরের মৃত আব্দুল ওয়াহেদের পুত্র মাহফুজ মিয়া, শহরের মুসলিম কোয়ার্টার চিলড্রেন পার্ক এলাকার মৃত টুলু শেখর পুরকায়স্থের পুত্র নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, শায়েস্তানগরের মৃত আব্দুল বারিকের পুত্র সাইকুল মিয়া, শহরতলীর পশ্চিম ভাদৈর মৃত নূর হোসেনের পুত্র জয়নাল মিয়া, বড়বহুলার আব্দুল আজিজ, শায়েস্তানগরের আলতাফ মিয়ার পুত্র সর্দার জসিম, শহরতলীর বড়বহুলার মৃত ছিদ্দিক আলীর পুত্র আসাদুজ্জামান আসাদ, পশ্চিম এড়ালিয়ার জমির আলীর পুত্র কবির হোসেন ও লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের মৃত শামছুল ইসলামের পুত্র উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদ।