বিশেষ প্রতিবেদন

মো. মামুন চৌধুরী ॥ চা ছাড়া একটি দিনও চলে না, এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি। অনেকে তো দিনে কয়েক কাপ করে চা পান করে থাকেন। অফিসে, আড্ডায়, বাড়িতে- চা যেন সঙ্গী হয়েই থাকে। কাজের ফাঁকে একটু সতেজতার জন্য চায়ের কাপে চুমুক দিতেই হয়। এই চা নিয়ে অনেকে আবার বেশ সৌখিন। চায়ের নতুন নতুন স্বাদ নিতে ভালোবাসেন তারা।
এক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় হলো সাত রঙের চা। এ চায়ের কথা আসলেই মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের নাম চলে আসে। তবে এবার হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌর শহরে দাউদনগর বাজারের ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁর দ্বিতীয় তলায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে সাত রঙের চা পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে রোস্তোঁরা মালিক মোঃ জুবায়ের আহমেদ সাত রঙের চা বিক্রি চালু করেন। প্রতিকাপ চা তিনি বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়। এ চায়ের খবর পেয়ে নানাস্থান থেকে লোকজন এসে সাত রঙের চা পান করে তৃপ্তি পেয়ে প্রশংসা করছেন।
রুবেল মিয়া বলেন, সাত রঙের চা পান করতে হলে শ্রীমঙ্গলে যেতে হতো। এখন আর যেতে হবে না। শায়েস্তাগঞ্জ ধানসিঁড়িতে বসে সাত রঙের চা পান করে তৃপ্তি পেয়েছি। এভাবে সাত রঙের চা পান করে একই মন্তব্য করেছেন অনেকে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গাজীউর রহমান ইমরান বলেন, সাত রঙের চায়ের প্রসঙ্গ আসলেই শ্রীমঙ্গলের কথা চলে আসে। এখন আমার শহরের ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁয় এ চা পান করা যাচ্ছে। এটা আনন্দের খবর।
জেলার লাখাই উপজেলার বুল্লা এলাকার বাসিন্দা রোস্তোঁরা মালিক মোঃ জুবায়ের আহমেদ বলেন, ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে সাত রঙের চা তৈরী করছি। এ চা পান করে লোকেরা তৃপ্তি পাচ্ছেন। দিন দিন বিক্রি বাড়ছে। এছাড়া রেস্তোরাঁয় চিকেন চাপ, গ্রীল চিকেনসহ নানা ধরণের আকর্ষণীয় খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এসব খাবার স্বাদে অতুলনীয়।
চা নিয়ে পরিবেশ প্রেমিক সুজন মিয়া বলেন, অনেকে মনে করেন চা পানের অভ্যাস শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর, আসলে তা ঠিক নয়। চায়ের রয়েছে অনেক উপকারিতা। চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ কম থাকার কারণে চা পান করলে কফির তুলনায় কম ক্ষতি হয়। তাই তো কফিকে টাটা বাই-বাই বলে আজ থেকেই সকাল বিকাল শুরু করুন চা পান।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ডাক্তার মিঠুন রায় বলেন, চায়ে এমন কিছু এনজাইম থাকে, যা হার্টে রক্ত সরবরাহ বাড়িয়ে দিয়ে হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখে। তাই তো চিকিৎসকেরা দিনে কম করে দুবার লিকার চা খাওয়ার পরামর্শ দেন।
চায়ে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপাটিজ মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি করে। ফলে নার্ভ শান্ত হয়। সেইসঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তিও দূর হয়।
শরীরে কোথাও আঘাত লেগেছে? এককাপ মধু চা খেয়ে ফেলুন। দেখবেন সব কষ্ট কেমন নিমেষে কমে যাবে। আসলে মধু চা প্রদাহ হ্রাস করে। সেই সঙ্গে ক্ষতস্থানের ফোলা ভাব কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন চা পান করলে ইউভি রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কোষেরা রক্ষা পায়। ফলে স্কিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রথমে ১ টেবিল চামচ চিনির সাথে ২ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে সিরা করে নিতে হবে। পরিমাণমতো পানি এবং চা পাতা চুলায় জ্বাল দিয়ে লিকার তৈরি করে নিন। ১ টেবিল চামচ লিকার ও ১ চামচ সিরা মিশিয়ে রাখুন। এরপর ২ টেবিল চামচ কনডেন্স মিল্কের সাথে ১ টেবিল চামচ লিকার মিশিয়ে নিতে হবে।
এবার একটি কাপে প্রথমে প্লেইন সিরা ঢেলে নিয়ে ২০ সেকেন্ড পরে সিরা মেলানো লিকারটুকু দিতে হবে। এর ৩০ সেকেন্ড পরে কনডেন্স মিল্কের মিশ্রণ দিতে হবে। ১ মিনিট পর বাকি লিকারটুকু গরম করে একদম কাপের ধার ঘেষে আস্তে আস্তে ঢালতে হবে। তৈরি হয়ে গেল সাত রঙের চা।