নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ স্ত্রীর সাথে আপসের শর্তে নবীগঞ্জের ঘোলডুবা এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মাসুম পারভেজ জামিন পেয়েছেন। রবিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক স্ত্রীর সাথে আপসের শর্তে আগামী ধার্য্য তারিখ পর্যন্ত মাসুমের অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। ওই সময়ের মধ্যে তাকে তার স্ত্রী আনিনার সাথে আপস করতে বলা হয়েছে বলে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিউল আলম জানিয়েছেন। এর আগে ২১ এপ্রিল রবিবার দিবাগত রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার ঘোলডুবা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পারভেজ নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কৈলং গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে। তিনি নবীগঞ্জ ঘোলডুবা এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত। এ সুবাধে নবীগঞ্জে তার অবস্থান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে ৭ সেপ্টেম্বর মাসুম পারভেজের সাথে নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা গ্রামের কয়রুল মিয়ার মেয়ে আমিনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ঘোলডুবা এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারীর চাকুরী নেন পারভেজ। নবীগঞ্জ উপজেলার গরু বাজার রাস্তায় ব্র্যাক অফিসের পাশে জনৈক ইলিয়াছ মিয়ার বাসায় থেকে সুখের সংসার শুরু করেন। তাঁদের ঘরে ফারিহা জাহান মিথি (৮) ও মুনতাহা জাহান রীতি (৩) নামে দুই সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে স্বামী মাসুম পারভেজ স্ত্রী আমিনাকে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতনের ঘটনায় গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পারভেজ এতে কোন সায় না দিলে নিরুপায় হয়ে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন আমিনা। মামলা চলাকালীন সময়ে আপোষের কথা বলে ঘোলডুবা এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মোঃ আব্দুর রকিব ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি ও সহকারী শিক্ষক মোস্তফা আল হোসাইনের মধ্যস্থতায় স্ত্রীর দায়েরী মামলার ধার্য তারিখে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনাসহ আপোষের মাধ্যমে স্ত্রী ও সন্তানদেরকে নিয়ে ঘর সংসার করবেন মর্মে আদালতে আপোষের শর্তে জামিন নেন। এরপরও বন্ধ হয়নি নির্যাতন। চাকুরীর পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য আপোষ মিমাংসার ১০ মাসের মাতায় দ্বিতীয় দফা পারভেজ আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী আমিনাকে বেদম মারপিট করেন। এ ঘটনায় আমিনা বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাসুম পারভেজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে মাসুম পারভেজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়া জারির পর পারভেজ পালিয়ে যান। অবশেষে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নবীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।