সারা দেশে হিট অ্যালার্ট জারি ॥ হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে আইসিডিডিআরবি’র নানা পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলমান তাপদাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় আজ ২১ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এ ঘোষণা অনুযায়ী হবিগঞ্জ জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কিন্ডার গার্টেন বন্ধ থাকবে।
পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতরসহ বেশ কয়েকটি ছুটির সমন্বয়ে টানা ২৬ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। আজ রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ছিল। কিন্তু দেশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল তিন দিনের জন্য দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ জন্য সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্টও জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর দাবি ছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের।
একইভাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এক বিবৃতিতে জানায়, তীব্র তাপদাহে শিশু কিশোরদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় প্রাথমিক স্কুলের ছুটি ২১ এপ্রিলের পরিবর্তে ২৮ এপ্রিল থেকে ক্লাস শুরু হবে। ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি স্কুল, শিশুকল্যাণ ও ট্রাস্টের স্কুলগুলো ও উপানুষ্ঠাানিক শিক্ষা ব্যুরো পরিচালিত স্কুল ছুটি থাকবে। ২৬ ও ২৭ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি। ২৮ এপ্রিল রোববার থেকে স্কুল-কলেজ খুলবে।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে আইসিডিডিআরবি’র পরামর্শ ঃ একের পর এক তাপামাত্রার রেকর্ড ভাঙছে চলতি মৌসুমের প্রতিটি দিন। এমন এক পরিস্থিতিতে ‘হিট স্ট্রোকের’ শঙ্কার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর, সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর বিভিন্ন পরামর্শের পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার কথা বলেছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
আইসিডিডিআরবি তাদের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে তাপপ্রবাহ নিয়ে সতর্কতামূলক পোস্টে বলেছে, ‘সারা দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অতিরিক্ত গরমে হতে পারে হিট স্ট্রোক, পানিশূন্যতার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। এ সময় বাড়ে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। তীব্র গরমে কিছু নিয়ম মেনে চলে নিজের ও পরিবারের সকলের সুস্থতা নিশ্চিত করুন।’ হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আইসিডিডিআরবি বলছে, ‘দিনের বেলায় যথাসম্ভব বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন, রোদ এড়িয়ে চলুন। বাইরে বের হলে ছাতা, টুপি বা ক্যাপ বা কাপড় দিয়ে মাথা যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন। হালকা রঙের, ঢিলে ঢালা এবং সম্ভব হলে সুতির জামা পরুন। প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। সহজে হজম হয়, এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং বাসি, খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। দিনের বেলায় একটানা শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা নিন বা গোসল করুন। প্রস্রাবের রঙের দিকে নজর রাখুন, তা হলুদ বা গাঢ় হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়ান। ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’ আইসিডিডিআরবি বলছে, সব থেকে ঝুঁকিতে আছে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, শ্রমজীবী ব্যক্তি, যেমন রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক, যাদের ওজন বেশি, যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, বিশেষ করে যাদের হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ আছে।