পুলিশের হাতে চোরসহ ৩ জন আটক ॥ মালামাল উদ্ধার
স্টাফ রিপোর্টার ॥ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গারী ব্যবসার অন্তরালে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী অপরাধী চক্রের সিন্ডিকেট। এ সকল সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মাদক সেবন, মাদক বিক্রি, জুয়া সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে সক্রিয় রয়েছে।
জানা যায়, এসব ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নতুন ব্রীজ গোলচত্ত্বর, ড্রাইভার বাজার ও পুরান বাজার, দাউদনগর বাজার, শায়েস্তাগঞ্জের পরিত্যক্ত রেল কলোনীসহ হাট-বাজার অলিগলি, বাস স্ট্যান্ড, শহরে পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠা ভাঙ্গারী ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ওই সব দোকানী ও সিন্ডিকেট চক্র সদস্যরা স্বল্প বেতন কিংবা কমিশনে স্থানীয় মাদক সেবী, বখাটে শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী, বয়স্ক নারী-পুরুষ ও ছিচকে চোরদের কাজে লাগিয়ে এবং তাদেরকে ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চা-বাগান থেকে বিভিন্ন প্রকার লোহার মালামাল, টিন, স্টিল, তামা, পেপার, বই, এ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক, মোবাইল, গাড়ি টায়ার, শ্যালু মেশিন, ইলেকট্রনিকস মোটর, রেলওয়ে বিভিন্ন লোহা, দরজা-জানালার গ্রিল, সাইকেল, ইলেকট্রিক ফ্যান, রিকশা, ট্রান্সফরমার, বিদ্যুৎ সরঞ্জাম সহ নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারী দ্রব্য চুরি করিয়ে তা কম দামে ক্রয় করে বিশাল মজুদ গড়ে তুলে।
এসব ভাঙ্গারী মালামাল দেশের বিভিন্ন স্থানে মিলে কারখানায় অধিক মূল্য বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তবে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৪০টি ভাঙ্গারী দোকান রয়েছে। তাদের নেই কোনো বৈধ কাগজপত্র। শুধু ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে আড়ালে ব্যবসা করে যাচ্ছে। অধিকাংশ ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীরা তাদের নিযুক্ত ফরিয়া- হকার কিংবা খুচরা -পাইকারি ক্রেতাদের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন সিন্ডিকেট চক্র সদস্যরা রাতের অন্ধকারে চুরি করে নিয়ে এসে ভাঙ্গারী দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছে। এমনকি এ সকল চোরের দল সুযোগ বুঝে বাসা – বাড়ি থেকে মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার চুরি কিংবা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকা সহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে। তারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে।
এদিকে গতকাল সকালে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ চোরাই মালসহ দুই ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী ও এক চোরকে হাতেনাতে আটক করেছে। তারা হল, হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকার বর্তমানে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিত্যক্ত কলোনীর ভাড়াটিয়া শাকিল মিয়ার পুত্র শাহিন মিয়া (২৫), ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মোঃ জামাল মিয়াসহ আরেকজন। শায়েস্তাগঞ্জবাসী জানান, ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী ও তাদের সক্রিয় চোরের উপদ্রবে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। পানির টিউবওয়েলসহ লোহার জিনিস রাখতে পারছেন না। সকালে উঠেই দেখেন নেই।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি মোবারক হোসেন ভূইয়া জানান, এখন পর্যন্ত ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও রহস্য উদঘাটন করা হবে।