নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টায় পৌর শহরের নবীগঞ্জ জে কে সরকারী হাইস্কুল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এতে শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ৫জন নেতাকর্মী ও পথচারী আহত হন। আধা ঘন্টা ব্যাপী দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলে। গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতা ছালেক মিয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ফয়জুর রহমান রবিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এই কমিটিতে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীকে আহ্বায়ক, সজীব খান, সৈকত আহমেদ, ইমরান রেজাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দলীয় প্যাডে জাহিদুল ইসলাম রুবেলকে আহ্বায়ক করে অপর একটি কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তির কাগজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়িয়ে পড়ে।
এরপর থেকে পাল্টাপাল্টি কমিটিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে একাধিক বার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংঘর্ষের ঘটনা সংঘটিত হয়। জাতীয় বা স্থানীয় যে কোন কর্মসুচীতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় সংসদের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র দাখিলের দিনেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৬ ডিসেম্বর সকালে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীসহ একটি পক্ষ জুয়েল ম্যানশনের সামনে অবস্থান নেয়। অপরদিকে জাহিদুল ইসলামের রুবেলের নেতৃত্বে অপর পক্ষ শহরের রাজা কমপ্লেক্সের সামনে বিজয় দিবসে প্রথম প্রহরে শহীদ স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ ফুল দিতে গেলে সংঘর্ষের সুত্রপাত হয়।
সকাল থেকে শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে জাহিদুল ইসলাম রুবেলের গ্রুপের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরী ও তার নেতাকর্মীরা নবীগঞ্জ ডাক বাংলোর সামনে জাহিদুল ইসলাম রুবেল গ্রুপের নেতা মোঃ ছালেক মিয়া(২০) এর উপর অর্তকিত হামলা করে। এসময় সে গুরুতর আহত হয় এখবর পেয়ে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৪/৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।
এ বিষয়ে জাহিদুল ইসলাম রুবেল অভিযোগ করে বলেন, ‘মহান বিজয় দিবসের ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আমরা শহরে অবস্থান নিই। এ সময় নাজিম উদ্দৌলার নেতৃত্বে আমাদের আমারে নেতা ছাত্রলীগের ছালিক মিয়ার উপর অর্তকিত নাজিম গংরা হামলা করে। পরে আমরা তাদের প্রতিহত করি।’
নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের দিক-নির্দেশনায় নবীগঞ্জ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে যাই। এ সময় জাহিদুলের নেতৃত্বে তার দলের কিছু নেতাকর্মীরা আমাদের বাধা প্রদান করে আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। আমরা তাদের প্রতিহত করলে তাদের সাথে আমাদের সংঘর্ষ হয়।
নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে ছাত্রলীগের নেতা ছালিক মিয়ার উপর একটি পক্ষ অর্তকিত হামলা করে। তাৎক্ষণিক পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে বিজয় দিবস পালনে আর কোন সমস্যা হয়নি।