চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ বিএনপি-জামাতের ডাকা অবরোধের কারণে পর্যটকশুণ্য হয়ে পড়েছে চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। গত এক সপ্তাহ ধরে উদ্যানে দেখা মিলছে না পর্যটকের। অথচ নভেম্বর মাসের এ সময়ে পর্যটকের ভীড় থাকার কথা জাতীয় উদ্যানে। এতে অলস সময় কাটাচ্ছেন উদ্যানে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ক্ষতির মধ্যে পড়েছে উদ্যান।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান সুত্র জানায়, গত ২৯ অক্টোবর প্রথম হরতালের দিন থেকেই উদ্যানে পর্যটক নেই। এর পর থেকে দফায় দফায় অবরোধের কারণে একেবারেই আসছেন না পর্যটকরা। গত সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার অবরোধ না থাকলেও ছিলনা কোন পর্যটক। অথচ শুক্রবার এবং শনিবারে প্রচুর পর্যটকের ভীড় থাকতো জাতীয় উদ্যান। এ অবস্থা চলে আসছে অবরোধের পর থেকেই। উদ্যান সূত্র আরও জানায়, গত ৮ দিনে উদ্যানে প্রতিদিন গড়ে ২০ জন পর্যটকও আসেনি। গড়ে প্রতিদিন রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪/৫শ’ টাকা। অথচ স্বাভাবিক সময়ে গড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার টিকেট বিক্রি হতো। বিশেষ করে শুক্রবার ও শনিবার তা ১০ থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত দাড়ায়। কিন্তু অবরোধের কারণে পর্যটক মওসুমের শুরু নভেম্বর মাসের প্রথমেই ধ্বস নামে উদ্যানের রাজস্ব আদায়ে। উদ্যানের খাবার দোকানসহ টুরিস্ট সপগুলোতে নেই কোন ক্রেতা। দোকানীরা অলস সময় পার করছেন। তাদের বেচাকেনা না থাকায় তারাও ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন।
টুরিস্ট সপ মালিক ও ইকো গাইড হারিস দেববর্মা জানান, কোন পর্যটক নেই, তাই গাইড করতে পারছি না। দোকানেও নেই কোন কেনাবেচা। এ অবস্থায় আমাদের জীবিকা কঠিন হয়ে পড়েছে। হোটেল মালিক মোতাব্বির হোসেন বলেন, প্রতিদিন হোটেলে শত শত মানুষের খাবার তৈরী হতো। এখন দৈনিক গড়ে ১০ জনও খেতে আসছেন না। কেনাবেচা না হলে আমরা কিভাবে চলবো আর কর্মচারীদের বেতন ও দোকান ভাড়াই বা কিভাবে দিব এ চিন্তায় আছি।
এ বিষয়ে উদ্যানের সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আমিন জানান, অবরোধের কারণে সাতছড়িতে পর্যটক নেই বললেই চলে। প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ জন পর্যটক আসছেন। অথচ এ সময়ে শত শত পর্যটক থাকার কথা। তিনি জানান, পর্যটক না থাকায় এবং অবরোধ দীর্ঘ হলে ক্ষতির মধ্যে পড়বে উদ্যান। এতে চলতি বছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। এতে উদ্যানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান এবং আনুসাঙ্গিক ব্যয় মিটানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।