জি কে গউছ এর ছেলে ব্যারিস্টার প্রীতম ও ভাতিজা রাফিদকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ
জেলা যুবদল সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রধান আসামী ॥ জি কে গাফফারসহ ৭ নেতাকর্মী কারাগারে
এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগরে পুলিশ ও বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশের ৮ সদস্য আহত হওয়ার অভিযোগে জেলা যুবদল সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াছকে প্রধান আসামী করে ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ ৪শ’ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই হারুন আল রশিদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এসআই উৎসব কর্মকারকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র ও বিএনপি কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছের ছোট ভাই জি কে গাফফার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল হক শরীফ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাব উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রায়েদ চৌধুরী রিংকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম, গোলাম মাহবুব, সাইদুর রহমান, আল-আমিন হোসেন তালুকদার, মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, সাইফুল ইসলাম রকি, বৃন্দাবন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব আবিদুর রহমান রাকিব, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নাজমুল হোসেন অনি, যুগ্ম আহ্বায়ক পৌর ছাত্রদল নেতা মাজহারুল ইসলাম রাব্বি, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ আশরাফ আহমেদ, জুয়েল মিয়া, জেলা যুবদল সদস্য সৈয়দ জিলানী নাঈম, রিহান মাহমুদ সুজন, নিজাম উদ্দিন, আবু ছালেহ, গিয়াছ উদ্দিন, শিমুল হাসান প্রমূখ। এ ঘটনায় আটককৃতদের মাঝে ৬জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তারা হলেন- জি কে গফফার, গিয়াস উদ্দিন, আবু সালেহ, নিজাম উদ্দিন, জুয়েল ও শিমুল হাসান। হবিগঞ্জের আদালত পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, রবিবার বিকেলে ৬জনকে আদালতে প্রেরণ করে সদর থানা পুলিশ।
এদিকে, ২৭ মার্চ আটক করা বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছ এর ছেলে ব্যারিস্টার মাজহারুল কিবরিয়া প্রীতম ও ছোট ভাই জি কে গফ্ফার এর ছেলে কলেজছাত্র জি কে রাফিদকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের ডাকা কর্মসূচিতে একমত প্রকাশ করে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গত শনিবার দুপুরে শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দিলে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে ৮ পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে বিএনপির জেলা কার্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শায়েস্তানগর পয়েন্টে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের মাঝে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশত লোক আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয় বেশ কয়েকজন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৩২ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ২১ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
এদিকে ফেসবুকে সরকার বিরোধী স্ট্যাটাস দেয়ায় শনিবার রাতে জেলা ছাত্রদল নেতা রুমেল খান চৌধুরীকে আটক করে পুলিশ। গতকাল তাকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।