চুরি প্রতিরোধে শায়েস্তানগর থেকে চৌধুরী বাজার পর্যন্ত এলাকাভিত্তিক ২ জন করে পাহারাদার নিয়োগ করা প্রয়োজন
শহরের নিরাপত্তায় আনসার সদস্য নিয়োগ করা হলে তারা চুরি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ শহরে একের পর এক চুরির ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবসায়ীরা কি ভাবছেন তা পর্যায়ক্রমে পাঠকদের সামনে তুলে ধরছে দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ। চুরি প্রতিরোধে হবিগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন আমাদের কাছে। দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকার পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগরস্থ মুন জেনারেল হাসপাতালের চেয়ারম্যান শামছুল আলম সাজু বলেন, সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে। এতে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তিনি চুরি প্রতিরোধে পুলিশের টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি শহরের শায়েস্তানগর থেকে চৌধুরী বাজার পর্যন্ত এলাকা ভিত্তিক ২ জন করে পাহারাদার নিয়োগের পরামর্শ দেন। তাছাড়া মার্কেট ভিত্তিক পাহারাদার নিয়োগ ও শহরের বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মার্কেটে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, চুরি সাধারণত হয়ে থাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা বাসাবাড়ির পেছন দিক থেকে। আর শহরের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেইন রাস্তার পাশে। ওই সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পেছনে রয়েছে মরা খোয়াই নদী। নদীর তীরবর্তী এলাকায় রয়েছে আবাসিক এলাকা। তাই চুরি প্রতিরোধে শুধু মেইন সড়কে পাহারাদার নিয়োগ নয়, আবাসিক এলাকায়ও পাহারাদার নিয়োগ করতে হবে। চোর যেহেতু মরা খোয়াই নদীর পাড় দিয়ে এসে থাকে তাই নদীর পাড় এলাকা ও শহরের বাইপাস এলাকায় পুলিশী টহল জোরদার করতে হবে। শুধু তাই নয়, শহরের প্রবেশ পথে অবস্থিত ৩টি ব্রিজেও পুলিশের নজরদারী বাড়াতে হবে। রাত ১২টার পর শহরের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। তাহলেও চুরির হার অনেক কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন ও পাহারাদার নিয়োগ করে হয়তো চুরি সম্পূর্ণ রোধ করা সম্ভব নয়, তবে এ ব্যবস্থা অবলম্বন করে চুরি অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তিনি শহরের নিরাপত্তায় প্রশাসনের মাধ্যমে আনসার সদস্যদের নিয়োগের পরামর্শ দেন। তিনি মনে করেন, আনসার সদস্যরা আমরা গতানুগতিক যে পাহারাদার নিয়োগ করে থাকি তাদের চেয়ে দক্ষ হবে। আর প্রশাসন তাদের দেখভাল করলে তারা চুরি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। তাছাড়া শহরে যদি ২০/৩০ জন আনসার নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়, তাহলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন করে তাদের সম্মানী পরিশোধ করা সম্ভব।
শায়েস্তানগর হাই টাওয়ার মার্কেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ রাজনীতিবিদ শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন বলেন, শহরের চুরি প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি চিহ্নিত দাগী চোরদের গ্রেফতার করতে হবে। বখাটে মাদকসেবীদের প্রতি পুলিশের নজরদারি বাড়াতে হবে। রাতে শহরের প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে পুলিশের টহল বাড়াতে হবে। তাছাড়া মার্কেট ও বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত পাহারাদার নিয়োগ করতে হবে। তাহলে শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে চুরির হার অনেক কমে আসবে।
তাছাড়া চুরি প্রতিরোধে তিনি শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, সকল প্রবেশ পথ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেটে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শ দেন। প্রশাসন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শহরে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগালে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সিসি টিভি ক্যামেরা মনিটরিং করলে শহরে চুরি অনেক কমে আসবে বলে তিনি বিশ^াস করেন।
এছাড়া মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় থানা পুলিশ, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের লোকজনের অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক সভা সমাবেশের উপর গুরুত্ব দেন তিনি।
এ ছাড়াও চুরি প্রতিরোধে শহরে পুলিশের টহল জোরদার ও পাহারাদার নিয়োগ করা হলেও চুরি অনেক কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।