চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ৩ কুখ্যাত ডাকাতের মধ্যে ২ ডাকাত এখন কারাগারে। তাদের সহযোগি কুখ্যাত মোশাহিদ প্রকাশ কালা সম্প্রতি কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ায় আতংক দেখা দিয়েছে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায়। আতংকে রয়েছেন এসব এলাকা মানুষ। বিশেষ করে চা বাগান ও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার মানুষ ৩ ডাকাতের গ্রেফতারে স্বস্তি পেলেও মোশাহিদ ছাড়া পাওয়ায় নতুন করে মানুষের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ৩০ থেকে ৬০টি চুরি ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্র ও দ্রুত বিচার এবং নির্যাতনসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও ডাকাত।
উপজেলার আলোনিয়া গ্রামের ছাবু মিয়ার ছেলে কুখ্যাত ডাকাত মোসাহিদ প্রকাশ কালার (৩২) বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় ১৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সে একটি বাহিনী তৈরী করে চুনারুঘাট, মাধবপুর, নবীগঞ্জ, বাহুবল, হবিগঞ্জ সদর, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি সংঘটিত করতো। সে গুপ্ত হত্যায় জড়িত রয়েছে বলেও এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর চুনারুঘাট থানা পুলিশের এসআই অলক বড়–য়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপজেলার নালমুখ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠালে এলাকায় শান্তি ফিরে আসে। গত ২৫ জানুয়ারি সে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আসে। সে এলাকায় আসায় মানুষের মধ্যে নতুন করে আতংক দেখা দিয়েছে।
উপজেলার কাচুয়া গ্রামের ইদ্রিছ আলীর ছেলে ফজর আলী প্রকাশ বাটন (৩৬)। সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও ডাকাত। তার একটি ডাকাত বাহিনী রয়েছে, সে তার বাহিনী নিয়ে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি সংঘটিত করে। তার বিরুদ্ধে সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন থানাসহ সারাদেশের বিভিন্ন থানায় কমপক্ষে ৪০/৪৫টি মামলা রয়েছে। তারমধ্যে ২২টি আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে। চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলী আশরাফ এতে নেতৃত্বে দেন। বর্তমানে সে কারাগারে থাকায় মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
উপজেলার লাতুরগাও গ্রামের করম আলীর ছেলে কুখ্যাত ডাকাত খালেক (৩৪)। সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন থানায় অনুমান ৩৫টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলী আশরাফ, এসআই অলক বড়–য়া ও শেখ আজহার আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপজেলার কালেঙ্গা রির্জার্ভের ছনবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। সে এলাকার যুবতী নারীদের ধরে তার আস্তানায় নিয়ে আমোদফুর্তি করতো। তার ভয়ে এলাকার কোন মানুষ প্রতিবাদ করার সাহস পেত না। তাকে গ্রেফতারে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সম্প্রতি খালেককে চুনারুঘাট থানা পুলিশ দুদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। এসআই অলক বড়–য়া জানান, তার কাছ থেকে তথ্য যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলী আশরাফ জানান, কুখ্যাত ডাকাত খালেক, মোশাহিদ ও ফজর আলী বাটনের সহযোগিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তারা কারাগারে থাকলে এলাকার মানুষ শান্তিতে থাকবে।