মোঃ আলাল মিয়া, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে ছিল সরকার। দেশের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ৪ এপ্রিল থেকে আবার ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে সাধারণ ছুটির মধ্যেই নবীগঞ্জের ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে ভিড় করছেন গ্রাহকরা। এসময় গ্রাহকরা একে অপরে ঠেলা ধাক্কাসহ ভিড় করেন। করোনাভাইরাস সতর্কতায় সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকা তো দূরের কথা মাস্ক ও দেখা যায়নি অনেকের মুখে। রবিবার ১৯ এপ্রিল সকাল ১০ টায় শহরের শেরপুর রোডে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংকের সামনে গ্রাহকদের গা ঘষে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এদিকে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। থেমে নেই মৃতের সংখ্যাও। এরই মধ্যে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদের গা ঘষে ঠেলাঠেলি ও ধাক্কাধাক্কির বিষয়টির ভিডিও ধারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্ক বিরাজ করে পৌরবাসীর মনে। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ পৌরসভার নাগরিকরা মনে করছেন, অসচেতনা পরিবেশ এভাবে চলমান থাকলে করোনার প্রভাব থেকে রেহাই পাবে না নবীগঞ্জ পৌরবাসীসহ উপজেলার মানুষ। বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ ছুটি শুরুর আগেই গ্রাহকরা প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করতে এসেছেন। যদিও ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়নি। সীমিত আকারে সরকারি ছুটির দিনগুলো ব্যতীত সাধারণ ছুটির দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন চলবে। ব্যাংক বন্ধ হবে ২টায়। সাধারণ ছুটির আগেই বেশিরভাগ গ্রাহক ২০ হাজার থেকে এক লাখের মধ্যে টাকা উত্তোলন করছেন। রবিবার নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন ব্যাংক দেখা গেছে গ্রাহকদের লম্বা লাইন ও গা ঘষাঘষি। প্রত্যেক গ্রাহক এক প্রকার আতঙ্কিত হয়েই ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছেন। সাধারণ ছুটিগুলোতে ব্যাংক খোলা থাকলেও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তারা চিন্তিত বলে জানান।
জহিরুল ইসলাম জোনাক নামে একজন গ্রাহক জানান, লম্বা ছুটিতে ব্যাংক খোলা থাকলেও বাসা থেকে বের হওয়াটাও বড় ঝামেলা। তাই প্রয়োজনীয় কিছু টাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিলাম। এটিএম বুথ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকা উঠাতে ঝামেলা। এছাড়া টাকা থাকবে কিনা এটি নিয়েই চিন্তায় আছি। সারা দেশ লকডাউন হয়ে গেলে তখন তো আরো বড় বিপদে পড়ব। আব্দুল মতিন নামের একজন ব্যবসায়ী জানান, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কমবেশি সবাই উদ্বিগ্ন। কিছু ব্যবসায়িক লেনদেন আছে। তাই ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছি। ইউনাটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক শাখার ম্যানাজার মুহিত চক্রবর্তী বলেন, গ্রাহকরা হয়ত মনে করছে, সারা দেশ সামনে লকডাউন হয়ে যাবে, তাই অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করছেন। আমাদের ব্যাংকে ও দীর্ঘ সারি ছিল। নবীগঞ্জ শাখার ইসলামী ব্যাংক ম্যানাজার কায়সার আহমেদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মচারীরা সাংবাদিকদের ব্যাংক প্রবেশে বাঁধা দেন এবং গ্রাহকদের গা ঘষে ঠেলা ধাক্কার বিষয়ে কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন।