নবীগঞ্জ প্রতিদিন ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোতে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য। লকডাউন ঘোষণার পর হঠাৎ আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বেশিদামে জিনিস-পত্র ক্রয় করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষজন।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে দেশে পর্যাপ্ত খাবার মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের ব্যাপক মনিটরিং চলমান থাকলেও নবীগঞ্জে প্রতিদিন বেড়েই চলেছে জিনিস-পত্রের দাম। দ্রব্যমূল্যের এহেন উর্ধ্বগতি প্রভাব ফেলছে দিনমজুর এবং স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাত্রায়। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরো তৎপর হতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন বাজার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি আদা ১০০ টাকার স্থলে ২০০ টাকা, গুড়ো দুধ ৫০০ টাকার স্থলে ৬০০ টাকা, দেশীয় রসুন ৮০ টাকার স্থলে ১২০ টাকা, চাল ৪০ টাকার স্থলে ৪৫ টাকা, মসুরী ডাল ৬৫ টাকার স্থলে ১০০ টাকা, কাঁচা ছোলা ৫০ টাকার স্থলে ৭০ টাকা, পেয়াজ ৪০ টাকার স্থলে ৫০ টাকা এবং ১৮ টাকার স্থলে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। নবীগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোতেও দেখা যায় একই রকম চিত্র। নবীগঞ্জ উপজেলার রিক্সাচালক কবীর মিয়া জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমন শুরুর পূর্বে তিনি প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০০ টাকা আয় করতেন। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পর তার আয় নেমে এসেছে শূন্যতে। তার উপর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
নবীগঞ্জ উপজেলার মদনপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ধান কাটা পুরোদমে শুরু হওয়ার পূর্বেই সরকারের পক্ষ থেকে আগাম বন্যার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। এছাড়া করোনা ভাইরাসের কারণে হাওরে শ্রমিক সংকট। অন্যদিকে সবধরণের জিনিসপত্রের দামই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় বিপাকে রয়েছেন তিনিসহ এলাকার অন্যান্য কৃষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবীগঞ্জ শহরের এক ব্যবসায়ী জানান, এলাকা লকডাউন ঘোষণার পর কমে গেছে পণ্য আমদানী। এছাড়া যানবাহন কম থাকায় মালামাল পরিবহনের খরচও বেড়েছে। যে কারণে তারা বেশি দামে জিনিসপত্র বিক্রয়ে বাধ্য হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলার নিবাহী কমকর্তা বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রশাসন অবগত আছে। এজন্য বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যে ওএমএস এর চাল বিক্রয় শুরু হয়েছে। তাই চালের দাম বাড়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। এছাড়া পণ্য পরিবহনেও নেই কোন বাঁধা-নিষেধ। সুতরাং এই ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত জেলা প্রশাসন।