মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ প্রাণটা আমার পালাই পালাই করছে। আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। নিজ মোবাইল থেকে এমন ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের রসলুপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোঃ আঃ ওয়াহাবের ছেলে পুলিশের নায়েক শাহ মোঃ আঃ কুদ্দুস সরকারি বন্দুক দিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ লাইনের মাঠের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা কাফরুল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত ফারুকুল ইসলাম জানান, ভোর সোয়া ৫টায় অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র নিয়ে ডিউটির জন্য বের হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটান। লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ মাধবপুর তার গ্রামের বাড়ি অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। আত্মহত্যার ঠিক আগে ওই পুলিশ সদস্য তার ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট আপলোড করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন “আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা আমার পালাই পালাই করছে। তবে সকল অবিবাহিতদের প্রতি আমার আকুল আবেদন, আপনারা পাত্রী পছন্দ করার আগে পাত্রীর মা ভাল কি না সঠিকভাবে খবর নিবেন। কারণ পাত্রীর মা ভালো না হলে পাত্রী কখনোই ভাল হবে না। ফলে আপনার সংসারটা দোযকের মতো। সুতরাং সকল সম্মানিত অভিভাবকগণের প্রতি আমার শেষ অনুরোধ বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিবেন।” এই স্ট্যাটাস দিয়েই তিনি নিজ সরকারি বন্দুক দিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিলেন।
নিহত পুলিশ কুদ্দুসের ভাই সিলেট রেঞ্জে কর্মরত এএসআই শাহ মোঃ তুহিন জানান, তার ভাই আঃ কুদ্দুছ এক বছর আগে মাধবপুর উপজেলার মৌজপুর গ্রামের সৈয়দ মোঃ কাউছারের মেয়ে হাবিবুন্নাহারকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রী হাবিবুন্নাহার ও শাশুড়ি সৈয়দা রুনিয়ার সঙ্গে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। কলহের জের ধরে তার স্ত্রী হাবিবুন্নাহার বাপের বাড়িতে ৬ মাস আটক ছিল। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ২ মাস আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে হাবিবুন্নাহারকে তার শ্বশুরালয়ে পাঠানো হয়। এরপরও হাবিবুন্নাহার ও শাশুড়ি কুদ্দুছের সঙ্গে কলহ লেগেই ছিল। যার কারণে কুদ্দুছের জীবন বিষিয়ে উঠে। পারিবারিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে কুদ্দুছ বৃহস্পতিবার ভোরে আত্মাহুতি দিয়েছে।
“আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে”
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com