দুর্নীতি অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ১নং লুকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কায়সার রহমান এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় তার প্রতি অনাস্থা দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারগণ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেয়া অনাস্থায় তারা উল্লেখ করেন- ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রে সরকার মনোনীত ৬/৭ বছরের অভিজ্ঞ উদ্যোক্তা প্রণয় দাসকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানের মনমতো ইউনিয়নের আষেঢ়া গ্রামের মোঃ ফরহাদ মিয়াকে টাকার বিনিময় নিয়োগ প্রদান, সরকারি কোনো চিঠিপত্র পরিষদের কোনো সদস্যের সম্মুখে উন্মুক্ত না করা, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ট্যাক্স আদায় এর জন্য নিজের লোক দিয়ে ১নং লুকড়া ইউনিয়নের ট্যাক্স আদায় করা হয়। ইউপি সদস্যরা আদায়কৃত ট্যাক্সের অর্থের হিসাব চাইলে তিনি হিসাব দেননি। ট্যাক্স বইয়ের টাকা চেয়ারম্যান নিজের লোক দিয়ে কালেকশন করেন। যা রাজস্ব আয়ে দেখানো হয়নি। ওই টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া চেয়ারম্যান ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ট্যাক্স আদায় করেন। তিনি ইউনিয়নের বসতবাড়ির উপর নির্ধারিত কর আদায় না করে তার সুবিধামতো কর আদায় করেন। স্মার্টহোল্ডিং কার্ড বাবদ প্রতি ঘর থেকে ২০০ টাকা আদায় করেন। এক মাসের মধ্যে কার্ড দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ১ বছর যাবত কোনো কার্ড দেয়া হয়নি। স্মার্ট হোল্ডিং কার্ড থেকে ২০০ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন, যে কারণে ইউপি সদ্যরা মানুষের কাছে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন।
তাছাড়া (ক) ১৪২৯ ও ১৪৩০ বাংলায় গ্রাম্য খোয়াড় দুই বছরের ইজারা বাবদ দশ হাজার টাকা এবং ১৪২৯ ও ১৪৩০ বাংলায় গ্রাম্য খোয়াড় ইজারা বাবদ দুই বছরের ষোল হাজার, ১৪২৯-১৪৩০ বাংলায় গ্রাম্য খোয়াড় দুই বছরের ইজারা বাবদ উনিশ হাজার টাকা সরকারি কোশাগারে জমা না দিয়ে সেই টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেন।
তাছাড়া ২০২২-২০২৩ অর্থ বছর সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় লুকড়া ইউনিয়নে নলকুপ স্থাপনের তালিকা করেন ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি এ বিষয়ে ইউপি সদস্যদের নিয়ে কোনো মতবিনিময় না করে নিজের ইচ্ছেমতো তালিকা তৈরি করেন দালাল এর মাধ্যমে। আর এ থেকে অতিরিক্ত টাকাও আদায় করেন তিনি।
এছাড়া আরও একাধিক প্রকল্প রয়েছে যার কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান কায়সার রহমান। পরিষদের সকল বিষয়ে চেয়ারম্যান একাই সিদ্ধান্ত নেন এবং সরকারি যে কোনো বরাদ্দ সঠিকভাবে বণ্টন করেন না। সঠিক সময়ে পরিষদের কার্যক্রম সম্পাদন করেন না এমনকি অফিস সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র সঠিক সময়ে জমা দেন না। চেয়ারম্যানের অনিয়মের কারণে এলাকার জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই, চেয়ারম্যান পরিষদের কার্যক্রম তার নিজ বাড়িতে বসে করেম করেন এ অভিযোগ মেম্বারদের।
অনাস্থা প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়- জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে জনগণকে হয়রানি করে অতিরিক্ত ফিস নেয়া হয় দালালের মাধ্যমে যা চেয়ারম্যান নিজে আত্মসাৎ করেন। ইউনিয়ন পরিষদের কর নিরূপন ও কর আদায় এবং অর্থ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির ইতিপূর্বে প্রদান করা কোন সুপারিশ চেয়ারম্যান রক্ষা করেননি। বেপরোয়াভাবে আইন-শৃঙ্খলার তোয়াক্কা না করে তিনি পরিষদ চালান। এ সকল বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গতকাল রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মেম্বাররা লিখিত অভিযোগ করেন।