চুনারুঘাটের আকর্ষণীয় ১৪টি চা বাগানের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন চানপুর ও চন্ডীছড়া বাগান দুটি দর্শনার্থীদের বেশি আকৃষ্ট করে

সাতটি পাহাড়ি ছড়া থাকায় এর নামকরণ হয়েছে সাতছড়ি

আতাউর রহমান কানন

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান: চুনারুঘাাট উপজেলার রঘুনন্দন পাহাড়ে এ প্রাকৃতিক উদ্যানটি অবস্থিত। ২৪৩ হেক্টর আয়তনের পূর্বের ‘রঘুনন্দন হিল রিজার্ভ ফরেস্ট’ নিয়ে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে এই ‘সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ উদ্যানে সাতটি পাহাড়ি ছড়া থাকায় এর নামকরণ হয়েছে সাতছড়ি। উদ্যানের কাছাকাছি রয়েছে ৯টি দৃষ্টিনন্দন চা বাগান। উদ্যানের পশ্চিম দিকে সাতছড়ি চা বাগান এবং পূর্ব দিকে চাকলাপুঞ্জি চা বাগান অবস্থিত। উদ্যানের অভ্যন্তরে টিপরা পাড়ায় একটি পাহাড়ি উপজাতির ২৪টি পরিবার বসবাস করে। এই ক্রান্তীয় ও মিশ্র চিরহরিৎ পাহাড়ি বনভূমি ভারতীয় উপমহাদেশ এবং ইন্দো-চীন অঞ্চলের সংযোগস্থলে অবস্থিত।
এ জাতীয় উদ্যানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের দুই শতাধিক গাছপালা। এরমধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো- শাল, সেগুন, আগর, গর্জন, চাপালিশ, পাম, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, জাম, জামরুল, আওয়াল, মালেকাস, ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি, বাঁশ, বেতগাছ ইত্যাদি। এছাড়া রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যের মতো এ উদ্যানেও ১৯৭ প্রজাতির জীব-জন্তু রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর। আরও আছে প্রায় ১৫০ প্রজাতির পাখি। এটি বাংলাদেশের একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণি-পাখিদের একটি অভয়াশ্রম। বনে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমাপরা হনুমান, শিয়াল, কুলু বানর, মেছোবাঘ, মায়া হরিণ ইত্যাদি; সরীসৃপের মধ্যে সাপ; পাখির মধ্যে ধনেশ, বনমোরগ, লালমাথা কুচকুচি, কাঠঠোকরা, ময়না, ভীমরাজ, ধলাকোমর শ্যামা, ঝুঁটিপাঙ্গা, শালিক, হলদে পাখি, টিয়া প্রভৃতি রয়েছে। আর শকুনের নিরাপদ এলাকা বলে এটা জাতীয়ভাবেই স্বীকৃত।
৪. মাজার: মুড়ারবন্দ মাজার ব্যতীত নরপতি গ্রামের সৈয়দ শাহ গদা হাসান (র.) ও সৈয়দ শরফুল হাসান (র.)-এর মাজার উল্লেখযোগ্য। এখানেও ভক্তকুল ও দর্শনার্থীদের একটা ভিড় লক্ষণীয়। প্রতিবছর নিয়ম করে উরস অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
৫. চানপুর ও চন্ডীছড়া চা বাগান: চুনারুঘাটের আকর্ষণীয় ১৪টি চা বাগানের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন এই বাগান দুটি দর্শনার্থীদের বেশি আকৃষ্ট করে। বাগান দুটির বুকচিরে ঢাকা সিলেটের মহাসড়ক চলে গেছে। প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এই বাগান দর্শন করে থাকেন।
৬. নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী: এ উপজেলার আদিবাসীদের মধ্যে খাসিয়া ও মণিপুরী জনগোষ্ঠী অন্যতম। আমার অফিসের গোপনীয় শাখার বর্তমান সিএ কাম ইউডিএ বীরেশ^র সিং এই চুনারুঘাটের মণিপুরী জাতিগোষ্ঠীর। মেধাসম্পন্ন এই বীরেশ্বর সিং দীর্ঘদিন ধরেই জেলা প্রশাসকদের সাথে কাজ করে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।
এই চুনারুঘাট বেশ ক’জন বিশিষ্ট ব্যক্তির জন্মস্থান। এঁদের মধ্যে খ্যাতনামাদের পরিচয় তুলে ধরা হলো:-
১. এনামুল হক মোস্তফা শহীদ: তিনি ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট-মাধবপুর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনসহ মোট ৫ বার এই আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, তিনি যতবার আওয়ামী লীগের নমিনেশন পেয়ে নির্বাচন করেছেন, ততবারই সফল হয়েছেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক লাভ করেন। বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ প্রণয়ন কমিটিরও তিনি একজন সদস্য। এই বরেণ্য ব্যক্তি ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হলে তাঁকে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বানানো হয় এবং মন্ত্রী থাকাবস্থায় ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। জাতীয় সংসদ প্লাজায় অনুষ্ঠিত তাঁর নামাজে জানাজায় আমার অংশ নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল।
২. চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত): সিআর দত্তের জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে ১৯৪৪ সালে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতার আশুতোষ কলেজে বিজ্ঞান শাখায় ইন্টারমিডিয়েট ও খুলনার দৌলতপুর কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করে ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে সৈনিক জীবনে প্রথম পাক-ভারত যুদ্ধে আসালংয়ে একটা কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাকিস্তান সরকার তাঁকে পুরস্কৃত করে।
১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম.এ.জি ওসমানী বাংলাদশেকে মোট ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সিলেট জেলার পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট ডাউকি সড়ক পর্যন্ত এলাকা নিয়ে ৪নং সেক্টর গঠন করেন এবং এই সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন সি আর দত্ত। মুক্তিযুদ্ধে তিনি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
স্বাধীনতা পর ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য সরকার সীমান্ত প্রহরী গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সি আর দত্তকে দায়িত্ব দিলে তিনি সীমান্ত প্রহরী গঠন করেন এবং নামকরণ করেন বাংলাদেশ রাইফেলস, যা সংক্ষেপে বিডিআর। বর্তমানে এ বাহিনীর নাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সি আর দত্ত ছিলেন বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রথম ডাইরেক্টর জেনারেল। এছাড়া ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তাঁকে নানা ধরনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৭ ও ১৯৮২ সালে দুই দফায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সি আর দত্ত বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত হন। এছাড়া ঢাকার কাঁটাবন থেকে কারওয়ান বাজার সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটি ‘বীরউত্তম সি আর দত্ত’ সড়ক নামে নামকরণ করা হয়। ২৫ আগস্ট ২০২০ এই বীর মুক্তিযোদ্ধার দেহবাসন হয়।
৩. মো. শফিকুল হক চৌধুরী: দরিদ্রবান্ধব এনজিও আশার প্রতিষ্ঠাতা। এশিয়া-আফ্রিকার ১৩টি দেশে এর শাখা বিস্তৃত। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের অধীন আশা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। ভূস্বামী পিতার এই সন্তান ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে লেখাপড়া শেষে প্রথমে কুমিল্লার বার্ডে এবং পরে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন এবং কিছুদিন পরে সেই চাকরির মোহ ত্যাগ করে আবার পূর্বের চাকরিতে ফিরে যান। ৯০ দশকে তিনি দরিদ্রবান্ধব এই ‘আশা’ নামক এনজিওটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ২০০৬ সালের কেয়ারটেকার সরকারের প্রথম ধাপের একজন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাঁর গৌরবময় জীবনের অধ্যায়ের একপর্যায়ে ৭২ বছর বয়সে ২০২১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।
৪. সৈয়দ শাহ ইসরাইল: তিনি সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিনের বংশধর। তাঁর দাদার দাদা ছিলেন এই সিপাহসালার নাসির উদ্দিন। তিনি এই চুনারুঘাটের প্রাক্তন তরফে মধ্যযুগের ষোড়শ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করে এখানে বসেই ফারসি ভাষায় সাহিত্য রচনা করে বিখ্যাত হয়েছেন। আরবি ও ফারসি উভয় ভাষাতেই উচ্চ দক্ষতার জন্য তিনি বিখ্যাত। তিনি ১৫৩৪ খ্রিষ্টাব্দে (৯৪১ হিজরি) মা’দান আল-ফাওয়াইদ (উপকারের খনি) রচনা করেন। এটি সিলেট অঞ্চলের প্রাচীনতম গ্রন্থ এবং এ কারণে ইসরাইলকে সিলেটের প্রথম লেখক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি মালিক আল-উলামা (পন্ডিতদের রাজা) উপাধিতে ভূষিত হন।
৫. মামুনুর রশীদ চৌধুরী: তিনি চুনাররুঘাটের ময়নাবাদ গ্রামের ১৯৬১ সালে নভেম্বরের ২০ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ব্যবসায়ী এবং ‘লন্ডন ট্র্যাডিশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সহ-পরিচালক। বাংলাদেশে শিক্ষাজীবন শেষে তিনি প্রথমে মধ্যপ্রাচ্য যান। এরপর ১৯৯১ সালে লন্ডনে পাড়ি দেন। সেখানে ছোটখাট কর্মজীবন শেষে ১৯৯৪ সালে ‘লন্ডন ক্লোথিং লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানির মাধ্যমে তাঁর ব্যবসায়ী জীবন শুরু হয়েছিল। নানা চড়াই-উতড়াই পার হয়ে তিনি অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও দক্ষতার সাথে এগিয়ে যান। তিনি মডেল ডিজাইনে দক্ষতা অর্জন করে নিজেই সেদেশে উচ্চ শ্রেণির পোশাক কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন এবং একসময় বিখ্যাত ব্র্যান্ড রব হুসনের সাথে ‘লন্ডন ট্র্যাডিশন’ স্থাপন করে আজানু লম্বা বিশেষ বুননের বিলাসবহুল ‘ডাফল কোট’ ডিজাইন ও তৈরি করেন। কোম্পানিটি এখন বছরে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার কোট রপ্তানি করে। কোম্পানিটি ব্যবসায়িক কর্মক্ষমতার স্বীকৃতিস্বরূপ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের জন্য ‘কুইন্স অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে। মামুন চৌধুরীকে বাকিংহাম প্যালেসের একটি রিসেপশন পার্টিতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সাথে সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
৬. এম.এ. রশিদ: তিনি একজন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ ছিলেন। ১৯৬২-১৯৭০ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চুনারুঘাটের বগাডুবিতে ১৯১৯ সালের ১৬ জানুয়ারিতে জন্মগ্রহণকারী এম.এ রশিদ ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পূর্ব বাংলার প্রথম ডক্টরেট ডিগ্রিধারী। তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখ্য হলো:- শিক্ষা কমিশন, জাতীয় পে কমিশন, শিল্পকারখানার শ্রমিক মজুরি কমিশন এবং পূর্ত মন্ত্রণালয় বিষয়ক রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৮২ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া স্বাধীনতার আগে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক সিতারা-ই-পাকিস্তানসহ একাধিক বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পুরস্কারপ্রাপ্ত। এই প্রবীণ শিক্ষাবিদ পাবনা থেকে বগুড়া যাওয়ার পথে এক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে পিজি হাসপাতালে ভর্তি হন এবং দশ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে ১৯৮১ সালের ৬ নভেম্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।
৭. সৈয়দ মহিবুল হাসান: তিনি একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৬৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসাবে সাবেক সিলেট-১৬ আসন থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের এমএলএ এবং একই আসন থেকে স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান করে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রীসভায় শ্রমমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রীসভায় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৈয়দ মহিবুল হাসান পরে এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন; কিন্তু ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তাঁর কন্যা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান একজন আইনজীবী এবং বিশিষ্ট পরিবেশবিদ।
সৈয়দ মহিবুল হাসান হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের নরপতি হাবেলিতে (উত্তর) সৈয়দদের এক বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক পরিবার ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলীর বংশধারার দাবিদার।
চুনারুঘাটে এক প্রাণবন্ত মতবিনিময় সভা শেষে ফেরার সময় আমার গাড়িতে বসা আমারই স্টাফ অফিসার মজিবর রহমান বললেন, স্যার, আপনার সাথে এতদিন সফরসঙ্গী হয়ে দেখলাম, আপনি যেখানেই যান, সেখানের লোকজন আপনার সাথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলেন। আর এলাকার গুণীজন ও দর্শনীয় স্থানসমূহের বিষয়ে আপনার জানার আগ্রহ অপরিসীম। এছাড়া আপনি দেখছি এলাকার অনেক বিষয়ই জানেন।
আমি বললাম, এই সব গুণী ব্যক্তি ও দর্শনীয় বিষয়ই তো এলাকার তথা দেশের সম্পদ এবং ইতিহাস-ঐত্যিহ্যের অংশ। এদের ধারণ ও লালন করা দরকার।
আপনি ঠিকই বলেছেন, স্যার।
আমরা কথায় কথায় বিকেল ৪টায় সদরদপ্তরে এসে পৌঁছলাম। (চলবে…)