লিটন পাঠান, মাধবপুর থেকে ॥ মাধবপুর উপজেলায় নদী-নালা খাল বিল ও অনেক বড় বড় দিঘী রয়েছে। এসব থাকা স্বত্ত্বেও আগের মতো বক ও বকের সারি আর চোখে পড়ে না। কয়েক বছর পূর্বেও মাধবপুরে বকের বিচরণ ছিল ব্যাপক হারে। শিকারীরা বিভিন্ন পন্থায় বক শিকার করায় তা আজ বিলুপ্তির পথে। বক শিকারীরা বাঁশের চিপ দিয়ে গোলাকৃতির খাঁচা তৈরী করে বক ধরার ফাঁদ তৈরী করেন। তা আড়াই ফুট প্রশস্ত ও সাড়ে ৩ ফুট উচ্চতার হয়। ওই খাঁচার বাহিরের দিকে বেতের পাতা স্তরে স্তরে সাজিয়ে দেওয়া হয়। উপরের দিকে দিয়ে বেত পাতা খাড়া ভাবে লাগিয়ে শিকারী এ ফাঁদের ভিতরে প্রবেশ করে পালিত বকের সাহায্যে কৌশলে বক শিকার করেন। আবার অনেকে নাইলন সুতায় গিট দিয়ে সুতার এক মাথা কাঠির সাথে বেঁধে ক্ষেতের আইলে শক্তভাবে বসিয়ে ফাঁদ পাতেন। অনেকে সন্ধ্যায় বক যখন বাসায় ফিরে তখন মার্বেল পাথর অথবা এটেঁল মাটির গোলাকৃতির গুলি বানিয়ে বাঁশের গোলাইনের সাহায্যে গুলি করে শিকার করে থাকেন। কেউবা আবার বন্দুক, এয়ারগান দিয়ে গুলি করে বক শিকার করে থাকেন। বিভিন্ন পন্থায় বক শিকার করেন শিকারীরা।
বকের প্রধান খাদ্য মাছ। বর্তমানে নদী-নালা খাল বিল শুকিয়ে যাওয়ায় বকের খাদ্য সংকটে প্রজনন কমে গেছে। উপজেলার বুল্লা বিল, মাধবপুর বিল, বৈচা বিল, বাকসাইর বিলে কিছু কিছু বক চোখে পড়লেও অন্যবিলে পানি শূন্য থাকায় চোখে পড়ে না।
মুরাদপুর গ্রামের জিয়াউর রহমান জানান, পানি শূন্যতায় মাছের আকাল ও বন উজার হওয়ায় বকের বাসস্থান নষ্ট ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ছোট ছোট ডোবা, নালা, জলাশয় সেচে মাছ ধরায় খাদ্য সংকটে এখন বক শুন্য হতে চলেছে। পরিবেশবিদ ও এলাকার সচেতন মহল মনে করেন- পানি শূন্য নদী ও বন জঙ্গল উজারের কারণে বাসস্থান ধ্বংস ও শিকারের কারণে বক এখন আমাদের পরিবেশ থেকে হারাতে চলেছে। বক প্রজাতি রক্ষার্থে জনগণের সচেতনতা প্রয়োজন।