পুলিশ আসামী গ্রেফতার না করায় হতাশ বাদীনি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ আদালতের নির্দেশ মানছে না পুলিশ। প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও আসামি ধরতে থানা পুলিশের কোন তৎপরতা নেই। বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নারী নির্যাতন মামলায় দীর্ঘ দেড় বছর যাবত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও দুলালকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়পুর গ্রামে।
২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে আসামি দুলাল মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন মিছিল মিটিং সমাবেশসহ সকল কর্মকান্ডে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দেন দুলাল। এমনকি প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘুরে বেড়ান কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। একের পর এক তারিখে অনুপস্থিত থাকলে আদালত তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আদেশ দেন কিন্তু তাতেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে বাদীপক্ষের ধারণা- তাহলে কি আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষিতই থাকবে পুলিশের কাছে। কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না আসামি দুলালের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী ও স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় ক্ষমতাধর কিছু নেতাকর্মীর দাপট ও প্রভাব বিস্তারের কারণে পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুলাল ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানীতে চাঁদাবাজি করেছেন। শিক্ষায় পিছিয়ে থাকলেও নানা কৌশলে ছাত্রলীগের পদ ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি ছাত্রলীগের পদ পাওয়ার আগে উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু কিভাবে আবার ছাত্রলীগের সভাপতি হলেন, বিষয়টি অজানা।
তবে বাহুবল মডেল থানার ওসি মশিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, দুলাল জনসম্মুখে না থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া কেউ যদি লুকিয়ে লুকিয়ে কোনো সভা সেমিনার করে তাহলে তাকে ধরা সম্ভব হয় না। স্থানীয়রা জানান, দুলালের এক ভাই জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, আরেক ভাই শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
প্রসঙ্গত, পশ্চিম জয়পুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী শাহেনা আক্তারকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল মিয়া, তার ভাই হেলালসহ ১০/১২ জন ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে জখম করে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদি হয়ে আদালতে মামলা করলে দুলালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। এরপর থেকে তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং বাদি ও তার সাক্ষিকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন।