স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ বলেছেন, হিন্দু নারীদের সম্পত্তির অধিকার দিলে জোরপূর্বক ধর্মান্তর বেড়ে যাবে, ধারণাটি ঠিক নয়। বাংলাদেশ লজ রিভিশন অ্যান্ড ডিক্লারেশন অ্যাক্ট, ১৯৭৩-এ ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনটি বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেনি। কাজেই বর্তমানে যে আইন আছে, তাতে ধর্মান্তরিত হলে হিন্দু নারী-পুরুষ সম্পত্তির অধিকার হারাবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অনলাইনে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। খসড়া হিন্দু উত্তরাধিকার আইন-২০২১ নিয়ে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। জাতীয় পর্যায়ে হিন্দু আইন প্রণয়নে নাগরিক উদ্যোগ কোয়ালিশন এই খসড়া তৈরি করেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, হিন্দু নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই আইন প্রণয়নে কোনো বাধা নেই। তবে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারের পক্ষে এই আইন প্রণয়নও সম্ভব নয়। এর জন্য হিন্দু সমাজ থেকে দাবির বিষয়ে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, বেদ যুগে নারীর অবস্থান সমমর্যাদায় স্থান পেয়েছিল। এখনো পাওয়া উচিত। হিন্দু নারীর সম্পত্তির অধিকারে সনাতনপন্থীরা বাধা দেন। তবে এটিও মনে রাখতে হবে, সনাতনপন্থীরাই এই ধর্মের মূল চালিকাশক্তি। ধর্মান্তরিত হলে নারী সম্পত্তি পাবে কি পাবে না, এটি সমাধান হওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানে এমপি আরমা দত্ত বলেন, দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে হিন্দু নারীর অধিকার রক্ষায় সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে। এখন আর পেছন ফিরে তাকানোর সময় নেই।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ বলেন, এ দেশে মানবাধিকার, সংবিধানের কথা বলা হয়। তাহলে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। নারীর অধিকার না দিলে সম-অধিকার, সমমর্যাদা থাকে না।
হিন্দু নারীর অধিকার বিষয়টিকে অনেকেই ইতিবাচক উল্লেখ করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত বলেন, হিন্দু ধর্ম যুগের সঙ্গে চলমান ধর্ম। ধর্মান্তরিত নিয়ে জুজুর ভয় আছে। এই আইন দ্রুত হওয়া উচিত। আইনের বিষয়গুলো জানতে হবে। তবে আইন নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি দিপালী চক্রবর্তী বলেন, যে দাবিগুলো আসবে, তা অবশ্যই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে।
এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সভাপতিত্বে এই ওয়েবিনারে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, ব্লাস্ট পরামর্শক তাজুল ইসলাম, এমজেএফ পরিচালক রীনা রায়, এমজেএফ কর্মসূচি সমন্বয়ক অর্পিতা দাস প্রমুখ অংশ নেন।