ভারতের এলএমএফটি হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় না থাকলেও শ্রীমঙ্গলের গভীর জঙ্গলে বিভিন্ন সময় অনুপ্রবেশ করে থাকে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাটে সংরক্ষিত বনাঞ্চল সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বিজিবির ৩দিন ব্যাপি অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে নতুন করে আর কোন গোলাবারুদ পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজিবি-৫৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল এসএনএম সামীউন্নবী চৌধুরী অভিযান সমাপ্ত হওয়ার খবর জানান। তিনি আরও জানান, অভিযানে ১৮টি রকেট লঞ্চারের গোলা উদ্ধারের ঘটনায় শুক্রবার তারা চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের করবেন।
সামীউন্নবী চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত বনের প্রতিটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে বিজিবির ২ প্লাটুন জোয়ান অংশ নেন। সেখানে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো পূর্বে র‌্যাবের উদ্ধারকৃত অস্ত্রের সাথে সাদৃশ্য রয়েছে। অভিযানকালে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে ভারতের কোন লোকজনের আনাগোনা রয়েছে কি-না তা কঠোর নজরদারীতে রয়েছে।
কলকাতায় কর্মরত আগরতলার সাংবাদিক শুভ্র গুপ্তা জানান, এক সময় ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স বা এটিটিএফের প্রধান রঞ্জিত দেব বর্মার হেডকোয়ার্টার ছিল সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে। এখানে তিনি বাংকার তৈরি করে অস্ত্রের মজুদ গড়ে তোলে সীমান্ত অতিক্রম করে ত্রিপুরায় চাঁদাবাজি এবং হামলার ঘটনা ঘটাতেন। রঞ্জিত দেব বর্মা দীর্ঘদিন আগরতলার কারাগারে বন্দি থাকার পর বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। বর্তমানে এটিটিএফ না থাকলেও নয়নভাসি জামাতির নেতৃত্বে এলএমএফটি সীমান্ত অতিক্রম করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
এ ব্যাপারে বিজিবি জানায়, এলএমএফটি হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় নেই। তবে তারা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এলাকায় গভীর জঙ্গলে বিভিন্ন সময় অনুপ্রবেশ করে থাকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১ জুন থেকে থেকে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের অরণ্যে ছয় দফা অভিযান করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব। অভিযানগুলোতে তারা ৩৩৪টি কামান বিধ্বংসী রকেট, ২৯৬টি রকেট চার্জার, একটি রকেট লঞ্চার, ১৯টি মেশিনগান, আটটি ম্যাগজিন, একটি বেটাগান, ছয়টি এসএলআর, একটি অটোরাইফেল, নয়টি মেশিনগানের অতিরিক্ত খালি ব্যারেল, প্রায় ১৬ হাজার রাউন্ড রাবার বুলেট, ২৫০ গুলি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আটটি বেল্ট, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেডিও, এসএমজি ও এলএমজির ৮ হাজার ৩৬০ রাউন্ড, থ্রি নট থ্রি রাইফেলের ১৫২ রাউন্ড গুলি, পিস্তলের ৫১৭ রাউন্ড গুলি, মেশিনগানের ৪২৫ রাউন্ড ৯ হাজার ৪৫৪ রাউন্ড বুলেট, ১০টি হাই এক্সক্লুসিভ ৪০ এমএম অ্যান্টি-ট্যাংক রকেট ও ১৩টি রকেট লঞ্চারের শেলসহ বেশকিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে পৃথক মামলা হলেও কোন রহস্য বা তথ্য উদঘাটন হয়নি এবং অস্ত্রগুলো কারা এখানে রেখেছেন তা জানা যায়নি। তবে সেখানে ত্রিপুরার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এটিটিএফ এর অনেক কাগজপত্র পাওয়া যায়।