স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জে ফুলতলি বাজার সংলগ্ন এলাকায় বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় সরকারের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি ক্ষতিপূরণের ৩৫ হাজার টাকা দেয়া হলেও ক্ষতিগ্রস্ত ৮ পরিবারের নিকট থেকে অতিরিক্ত ২ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেন আব্দুল মন্নাফ ও আবু শ্যামা নামের দুই ব্যক্তি। এর মাঝে আব্দুল মন্নাফ স্থানীয় মুশকিল হাসান মাজার কমিটির ক্যাশিয়ার এবং আবু শ্যামা ফুলতলি বাজারের ব্যবসায়ী। স্থানীয়ভাবে ওই দুই ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় নিহত ৮ পরিবারের সদস্যদের নিকট থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ২ হাজার করে এবং আহতদের নিকট থেকে ৫শ করে টাকা হাতিয়ে নেন। মুড়াউড়া গ্রামের নিহত ছামিরুন্নেসার স্বামী আবু তাহের ও নিহত হালিমা আক্তারের স্বামী আবু শ্যামা অভিযোগ করে বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর বিআরটিসি বাস কর্তৃপক্ষ থেকে তাদের ৮ পরিবারকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং আহতদের জন্য ৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনের এমপি দেওয়ান মিলাদ গাজীর উপস্থিতিতে ফুলতলি বাজারে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদেরকে ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন। কিন্তু ওইদিনই অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মন্নাফ ও আবু শ্যামা ওই ৮ পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভুল বুঝিয়ে ২ হাজার টাকা করে দিতে বলেন। কিসের জন্য টাকা দিতে হবে জানতে চাইলে তারা সদুত্তর না দিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন। এক পর্যায়ে নিহত ৮ পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়েই ২ হাজার করে তাদেরকে টাকা দেন। খবরটি জানাজানি হলে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল মন্নাফ জানান, টাকা আমি নেইনি, সাবেক মেম্বার জমসেদ আলী আমাকে টাকা নিতে বলেন এবং স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী আবু শ্যামার দোকানে বসেই টাকা নেয়া হয়। পরে এ খবরটি শুনে গ্রামবাসি আপত্তি জানালে টাকাগুলো আমার কাছে এখনও আছে। দুই একদিন পর পঞ্চায়েতের মিটিং আছে। আলোচনা করে আমি ফেরত দিয়ে দেব। এ বিষয়ে আবু শ্যামা বলেন, আমি টাকা নেইনি। আমি দোকানদার। আমার দোকানে বসে তারা টাকা নিয়েছে। আলোচনায় ছিলাম না। এ বিষয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে তিনি বলেন, যারা টাকা নিয়েছেন ঠিক করেননি। এ বিষয়ে সাবেক মেম্বার জমসেদ আলী জানান, আমি কাউকে টাকা নিতে বলিনি। অনুষ্ঠান করতে যে টাকা খরচ হয়েছে তা গ্রামের ফা- থেকে খরচ করার কথা। আব্দুল মন্নাফ হচ্ছেন গ্রামের ক্যাশিয়ার। তিনি টাকা নিয়েছেন কি না তিনিই ভালো জানেন।