নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় যৌতুকলোভী শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার হয়ে নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের ৩ সন্তানের জননী নাসিমা বেগম বিপাকে পড়েছেন। নির্যাতনের শিকার হয়ে নাসিমা ৩টি অবুঝ সন্তান নিয়ে বিগত দেড় বছর ধরে পিত্রালয়ে বসবাস করছেন। তার সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় যৌতুকের শিকার নাসিমা বেগম হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কগ-৫) আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে স্বামী সিলেটের ওসমানীনগর থানার তাহিরপুর গ্রামের মৃত আঃ ছালামের পুত্র লেছু মিয়া (৪০) ও তার চাচাতো ভাই মৃত আব্দুল গনির পুত্র আবু বক্কর মিয়াকে (৪২) আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে নাসিমা উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তার বিবাহ হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ২ ছেলে ও ১টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তার স্বামী একজন সহজ সরল প্রকৃতির লোক ও বাকপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
২নং আসামী বক্কর মিয়া একজন প্রতারক, চরিত্রহীনও লম্পট প্রকৃতির লোক। বক্কর মিয়া তার স্বামীকে বিভিন্ন ভাবে কুপরামর্শ দিয়ে একপর্যায়ে টমটম গাড়ী কিনে দেওয়ার প্রলুদ্ধ করে নাসিমার মা-ভাইদের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক বাবদ দেওয়ার জন্য তার স্বামীর মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ ও একাধিক বার নির্যাতন করে।
উক্ত টাকা দিতে নাসিমার পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় নাসিমার উপর নেমে আসে নির্যাতন। একপর্যায়ে স্বামী ও বক্কর মিয়ার নির্যাতনের শিকার হয়ে নাসিমা ২০১৯ সনের ৪ সেপ্টেম্বর সন্তানদের নিয়ে পিত্রালয়ে চলে আসে। এর পর থেকে নাসিমা তার অবুঝ সন্তানদের নিয়ে তার মা-ভাইদের সাথেই আছেন। তার স্বামী বা তার শ্বশুরবাড়ীর কেউই তাদের খোঁজ খবর নেয় না।
এদিকে উক্ত ঘটনার মামলার প্রেক্ষিতে আসামীরা প্রায় মাসখানেক হাজতবাস করেন। এই মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন থাকায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে নাসিমার ভাই হামদু মিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করে আসামীরা। এ প্রেক্ষিতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন নাসিমার ভাই।
এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নাসিমার পরিবারের লোকজন এখনো তাদের নানা হুমকি ধামকিতে আতংকে দিনাতিপাত করছেন।