নবীগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সভাপতির বোমা বিস্ফোরণ মামলা ॥ মাধবপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শ্রীধাম দাশ গুপ্ত নিজেই বাদী হয়ে বোমা বিস্ফোরণে অভিযোগ করেছেন ॥ পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্য দিয়েই আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে নবীগঞ্জ ও মাধবপুর পৌরসভার নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জনগণের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা থাকলেও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে নবীগঞ্জ ও মাধবপুর পৌরসভার নির্বাচন। উভয় পৌরসভায়ই আওয়ামী লীগ প্রার্থী তাদের লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ করেছেন। নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়াসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অর্ধশত লোককে আসামী করা হয়।
অপরদিকে, মাধবপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও আদাঐর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক পাঠান দাবি করেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় কেন্দ্রীয় নেতাদের বিদায় জানাতে সড়ক ও জনপথের ডাক বাংলোর সামনে মেয়র প্রার্থী শ্রীধাম দাশ গুপ্তসহ আমরা দাঁড়িয়েছিলাম। এ সময় প্রার্থীকে লক্ষ্য করে পর পর তিনটি ককলেট বোমা নিক্ষেপ করা হয়। অল্পের জন্য আমাদের শরীরে লাগেনি। এ ব্যাপারে রাতেই শ্রীধাম দাশ গুপ্ত বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পংকজ সাহার ভাই বর্তমান মেয়র হীরেন্দ্র লাল সাহাকে এক নাম্বার আসামীভূক্ত করে ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগে আরো অজ্ঞাত রয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জন। শ্রীধাম দাশ গুপ্ত বলেন, আমাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে দিতেই এ ধরনের হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি মেয়র হীরেন্দ্র লাল সাহাকে আসামী করে মামলা দিয়েছি। অবশ্য থানায় মামলাটি এফআইআর হয়নি।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র হীরেন্দ্র লাল সাহা সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ ধরনের কোন ঘটনা কোথাও ঘটেছে বলে শুনিনি। আমাকে আসামী করা হয়েছে এটিও অবাক হওয়ার বিষয়। মাধবপুর থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি, তবে এখন পর্যন্ত অভিযোগটি এফআইআর করা হয়নি।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ মনিরউজ্জামান জানান, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। সবগুলো কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ ধরেই ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৯জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক আনসার, পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব দায়িত্ব পালন করবেন।
অপরদিকে, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার দেবশ্রী দাস পার্লি জানান, একটি অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমূখর পরিবেশে নির্বাচন উপহার দিতে দিনরাত কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা এবং সকল আইনশৃংখলা বাহিনীও মাঠে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। পৌরসভার ১০টি কেন্দ্রে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ সদস্য বিশিষ্ট ২টি বিশেষ স্ট্রাইকিং ফোর্স, ২ প্লাটুনে ৪০ জন বিজিবি, র‌্যাবের ২০ সদস্যের স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১টি স্পেশাল টিম এবং প্রতিটি কেন্দ্রে ৯ জন আনসারসহ নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহিউদ্দিন আহমদ জানান, নির্বাচনের সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করা হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখার সময়কালে তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের সাথে আমাদের মিটিং রয়েছে। প্রয়োজনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিধি আরো বৃদ্ধি হতে পারে।