অবৈধভাবে দোকানঘর ভেঙ্গে ক্ষতি সাধনের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবৈধভাবে দোকানঘর ভেঙ্গে ক্ষতি সাধনের অভিযোগে হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র দীলিপ দাস ও পৌর সচিব ফয়েজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হবিগঞ্জের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সংবাদপত্র এজেন্ট মোঃ শাহজাহান মিয়া।
মামলা সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ পৌর ভবনের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংলগ্ন ড্রেনে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা ফেলে স্তুপে পরিণত করে আসছিল। ফলে ড্রেনটি বন্ধ হয়ে উজান দিকের শায়েস্তানগরের বাসা বাড়িতে অল্প বৃষ্টিতেই পানিতে সয়লাব হয়ে যেত। বিভিন্নভাবে উদ্যোগ নিয়েও ড্রেনে স্তুপ করে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এসব সমস্যার কথা উল্লেখ করে হবিগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ ড্রেনের উপর লীজ গ্রহীতার নিজ খরচে দোকান ঘর নির্মাণ করার শর্তে একটি দোকান ঘর ভাড়া দেয়ার জন্য ২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পৌর সচিব ফয়েজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। গণবিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যাচাই বাছাই শেষে যশেরআব্দা এলাকার মোঃ শাহজাহান মিয়াকে লীজ গ্রহীতা হিসাবে ১০ বছরের জন্য নির্বাচন করে পৌর কর্তৃপক্ষ। শাহজাহান সেখানে নিজ খরচে দোকান ঘর নির্মাণ করেন এবং বিভিন্ন স্টেশনারী ও পত্রিকা বিক্রির জন্য দোকান ঘরটি ব্যবহার করে আসছিলেন।
এদিকে ড্রেনের মুখে ময়লা আবর্জনা ফেলতে না পারায় আশপাশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানসহ কিছু ব্যক্তির মারাত্মক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়- পার্শ্ববর্তী ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ শাহজাহান মিয়াকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এক পর্যায়ে পৌরসভার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিলীপ দাস ও সচিব ফয়েজ উদ্দিন শাহজাহান মিয়াকে দোকান ঘর ছেড়ে দিতে বলেন এবং শীঘ্রই তার দোকান বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন। এতে বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালের ১৬ জুন শাহজাহান মিয়া হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিলীপ দাস ও সচিব ফয়েজ উদ্দিন। এক পর্যায়ে কোনো ধরনের নোটিশ প্রদান ছাড়াই ২০১৯ সালের ৭ জুলাই পৌর সচিব ফয়েজ উদ্দিনের নেতৃত্বে শাহজাহান মিয়ার দোকান ঘরটি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়।
এদিকে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় দায়েরকৃত মামলাটির তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় শাহজাহান মিয়ার পক্ষে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আদেশে উল্লেখ করা হয়- বাদীকে তার ক্ষতিপূরণের জন্য শর্ত মোতাবেক উপযুক্ত আদালতের শরণাপন্ন হতে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি হবিগঞ্জের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলাটি দায়ের করেন সংবাদপত্র এজেন্ট মোঃ শাহজাহান মিয়া।