হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক দানবীর মোঃ সারোয়ার আলম শাকিল উৎসবমূখর পরিবেশে তাঁর মনোনয়নপত্র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম এবং সহকারি রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কাছে জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১টায় মোঃ সারোয়ার আলম শাকিল শত শত সমর্থকদের সাথে নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যান। এ সময় তাঁর সমর্থকদের মধ্যে দেখা দেয় আনন্দের বন্যা। তিনি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নন। নেই কোন পদ পদবী কিন্তু তিনি আওয়ামীলীগ সমর্থন করেন। তার ভাল লাগে বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ। তাই তিনি দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত, টেন্ডারবাজিমুক্ত পৌরসভা বিনির্মাণে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ পৌরসভার নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর। ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোঃ সারোয়ার আলম শাকিল হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল এলাকার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। শাকিল এই প্রথমবারের মতো পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি চান পৌরসভার পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে। তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে পৌর এলাকার অন্তত ১ হাজার ৫শ পরিবারকে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করবেন। যাতে ওই পরিবারগুলোকে পেছনে ফিরে তাকাতে না হয় এবং কারো কাছে হাত পাততে না হয়। ‘‘জয় পরাজয় বড় কথা নয়, পৌরবাসীর সেবা করা বড় কথা’’। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যার সন্তানের জনক। তার মা রওশন আরা ছিলেন একজন ধার্মিক ও সহজ সরল সাদা মনের নারী। তার স্ত্রী শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ইংরেজী প্রভাষক।
সারোয়ার আলম শাকিল একটি আধুনিক পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়ে তুলতে ঘোষণা করেছেন নির্বাচনী ইশতেহার। ১. শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মধ্যে আধুনিক সুবিধার সম্প্রসারণ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে। ২. তরুণ যুবসমাজের পাশে দাঁড়ানো ও দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ৩. দুর্নীতির ব্যাপারে কঠোর নীতি প্রণয়ন করা হবে, কারণ আমি কখনোই দুনীতি প্রশ্রয় দেব না। ৪. বাজারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। ৫. মাদকমুক্ত শায়েস্তাগঞ্জ গড়তে সবসময় সচেষ্ট থাকব, মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না। ৬. সব ধরনের উন্নয়ন প্রজেক্ট মানসম্মত বাস্তবায়ন ও পৌরসভার প্রত্যেক গলিতে পাকা রাস্তা ও ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হবে। ৭. সর্বস্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধিকল্পে পৌরসভার সকল শিক্ষাঙ্গনের মান উন্নয়ন করা হবে। যদিও জেলার মধ্যে সবচেয়ে ভাল স্কুল শায়েস্তাগঞ্জে। তারপরও এটা পর্যাপ্ত নয়, সীমিত আসনের কারণে অনেকেই সুযোগ পায় না। তাই সকল শিক্ষাঙ্গনের মান উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। ৮. সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা এবং একটি হাসপাতাল নির্মাণ নিশ্চিত করব এবং প্রয়োজনে নিজ খরচে দাতব্য চিকিৎসালয় খোলা হবে। ৯. পৌরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পয়েন্টে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা হবে। ১০. আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা ও কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা হবে। ১১. সরকারি ভাতা যোগ্য সকলের ভাতাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে। ১২. মেয়রের ভাতা ও তেল খরচের বরাদ্দ আমার প্রয়োজন নেই। উক্ত টাকা পৌরসভার দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হবে। ১৩. পৌরকর সরকারি বিধি মোতাবেক সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। কারও উপর ভৌতিক কর প্রয়োগ করা হবে না। যেহেতু কর আদায়ের সাথে নগরের উন্নয়ন জড়িত তাই ব্যবসায়ী ও মুরুব্বিয়ানদের সাথে আলোচনা করেই কর ধার্য্য করা হবে। ১৪. পৌরসভার প্রত্যেক রাস্তায় স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা করা হবে। ১৫. পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২২ বছর অতিবাহিত হলেও এখনও নিজস্ব পৌরভবন হয়নি, তাই নির্বাচিত হলে প্রথমেই পৌর ভবনের ব্যবস্থা করা হবে। ১৬. পৌরসভার শিশু-কিশোরদের জন্য একটি আধুনিক পরিবেশবান্ধব পার্ক করা হবে। ১৭. পৌরসভার গণ মানুষের দাবি হিসেবে একটি পৌর ঈদগাহ ও একটি পৌর শ্মশানের প্রতিষ্ঠা করা হবে। ১৮. যে ওয়ার্ডের মহল্লায় শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রাইমারী স্কুল নেই, সেখানে প্রাইমারী স্কুল করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১৯. একটি পৌর অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হবে। ২০. গাড়ির যানজট নিরসন সহ গাড়ির নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড করা হবে।
মোঃ সারোয়ার আলম শাকিল একটি স্বপ্নের পৌরসভা বিনির্মাণে প্রত্যয়ী, সুন্দর, সচেতন জবাবদিহিতামূলক আধুনিক সমাজ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের পৌরবাসীর মূল্যবান ভোট, দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করেন। তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ সদর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মোঃ সাদাত চকদার, মোঃ কিতাব আলী, বাহাদুর আলম, হাবিবুর রহমান হারুন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি