স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ নাগুড়া ধান গবেষণা কেন্দ্রে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কের শচীন্দ্র কলেজের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, সাংবাদিক, বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষকগণ অংশ গ্রহন করেন। পুকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নানু মিয়ার সভাপতিত্বে এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বানিয়াচং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার, প্রভাষক লতিফ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা নানু মিয়া, বিশ্বজিত দাশ, উপজেলা যুবলীগ নেতা শামছুল হক আখনজী, আফরোজ মিয়া, নাসির উদ্দিন, কাজী শাহজাহান, শেখ আজিজুল হক, শেখ আলাউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন, সালেহ আহমেদ, আবুল কাশেম, শেখ জহর আমিন, শাহজাহান, আব্দুল্লাহ মিয়া, কামাল মিয়া প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি জাতীয় সংসদে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়েছে। নাগুড়ায় ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করা হউক এটা হবিগঞ্জ জেলাবাসীর দাবি। এখানে প্রায় ১শ’ একরের উপরে সরকারি খাস জমি ও হাজার হাজার একর কৃষি-অকৃষি জমি রয়েছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও বিদ্যমান। ইচ্ছে করলে এখনই শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব। এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে সরকারের অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। তারা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী, প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তারা বলেন- একটি তৈরি জায়গা থাকতে নতুন করে আরেকটি জায়গা তৈরি করে সরকারের শত শত কোটি টাকা অপচয় করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
নাগুড়া ফার্ম এলাকা ৯টি উপজেলার প্রাণকেন্দ্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভাল, যানজট ও কোলাহল মুক্ত, মনোরম পরিবেশ হওয়ার কারণে জায়গাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপযুক্ত স্থান। তাছাড়া হবিগঞ্জ শহরের অতি সন্নিকটে। এর চেয়ে উপযুক্ত জায়গা হবিগঞ্জ জেলায় আর কোথাও নেই। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও হবিগঞ্জ জেলাবাসীর দাবি নাগুড়া ফার্ম এলাকায়ই “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” স্থাপন করা হউক। এছাড়া ওই এলাকায় জমির দাম খুবই কম। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমির প্রয়োজন পড়লেও শহরের তুলনায় প্রায় ২০ গুণ কম খরচে জমি ক্রয় করা সম্ভব। এখানে প্রাথমিক গবেষণা চালানোর মতো যাবতীয় অবকাঠামো ও ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে। যানজট কোলাহলমুক্ত পরিবেশের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শহরের বাহিরেই স্থাপন করা হয়েছে। উপমহাদেশের প্রথম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টিও ১৯৬১ সালে শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হয়েছিল। পরিবেশ প্রকৌশলী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মনে করেন- হবিগঞ্জ শহর যেভাবে চতুর্দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে সেটি বিবেচনায় নিলে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একমাত্র উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে নাগুড়া কৃষি গবেষণাগার কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য যে রকম অনুকূল পরিবেশ দরকার নাগুড়া ফার্মে সেরকম পরিবেশ বর্তমানে বিরাজমান। তাছাড়া সেখানে খাস জমি, অবকাঠামো ও গবেষণাগার এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান।
সার্বিক দিক বিবেচনায় নাগুড়াতেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হওয়া উচিত। কারণ এখানে প্রচুর খাস জমি পড়ে আছে এবং সরকারের বাজেট কম লাগবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত এবং জেলার প্রতিটি উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য চমৎকার একটি জায়গা। নাগুড়াতে যেহেতু তৈরি জায়গা রয়েছে সেহেতু নতুন করে জায়গা নির্বাচন করে ক্রয় করারও কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে বক্তারা বলেন। তাই সম্মিলিতভাবে নাগুড়া ফার্মেই স্বপ্নের “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করে হবিগঞ্জ জেলাকে বাংলাদেশের অন্যতম আলোকিত পরিবেশ বান্ধব জেলায় রূপান্তর করার আহ্বান জানান। তারা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি করেন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে ২০১৪ সালের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উত্থাপিত এবং প্রস্তাবিত নাগুড়া কৃষি ফার্মেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে হবিগঞ্জবাসীর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার।