প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এমপি আবু জাহিরকে দলীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের অভিনন্দন
শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের পর এবার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়ার খবরে হবিগঞ্জবাসীর মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা

মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জাতীয় সংসদে ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বিল-২০২০’ পাস হয়েছে। কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উন্নত শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে এ বিশ্ববিল্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিলটি প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি হয়।
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিলটি গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর চলতি বছরের ২৩ জুন বিলটি সংসদে উত্থাপিত হলে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। স্থায়ী কমিটি গত ৭ সেপ্টেম্বর সংসদে বিলটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। এই বিলে ৫৪টি ধারা হয়েছে। এতে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন, সংজ্ঞা ছাড়াও আচার্য, উপাচার্যের দায়িত্ব-কর্তব্য, ট্রেজারার, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল এবং অর্থ কমিটি সম্পর্কিত বিধান আছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি অনুষদ থাকবে বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছ। অনুষদগুলো হলো- কৃষি অনুষদ, মৎস্য অনুষদ, প্রাণিচিকিৎসা ও প্রাণিসম্পদ বিজ্ঞান অনুষদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ।
বিলের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রসর বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে কৃষি বিজ্ঞানে উন্নত শিক্ষাদানের পাশাপাশি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রচলিত অন্যান্য বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি এবং নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ দেশে কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে হবিগঞ্জ জেলায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয় উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রমের অগ্রগতিকল্পে এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ইনকিউবেটরের মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে কৃষিখাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করার লক্ষ্যে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা খুবই প্রয়োজন এবং যুক্তিযুক্ত।
এদিকে সংসদে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিল পাস হওয়ার সংবাদে আনন্দে ভাসছেন হবিগঞ্জবাসী। বিল পাস হওয়ার পরপরই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দের বন্যা। অনেকেই ফেসবুকে তার অনুভূতি প্রকাশ করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন হৃদয়ের গভীর থেকে। নি¤েœ ফেসবুকে দেয়া কয়েকজনের অনুভূতি দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী লিখেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাশ। অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা আপার প্রতি এবং হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির মহোদয় এর প্রতি’।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হওয়া হবিগঞ্জবাসীর জন্য বড় অর্জন। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে অত্র অঞ্চলের শিক্ষানগরী বা শিক্ষা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠবে হবিগঞ্জ। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এমপি আবু জাহির এর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান লিখেন- ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাশ। অভিনন্দন হবিগঞ্জ-৩ আসনের মাননীয় এমপি আবু জাহির ভাইকে’।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল আজাদ রাসেল লিখেন- ‘স্বপ্নপূরণ, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাশ। অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি, প্রিয় নেতা অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এর প্রতি। আপনার নিরলস প্রচেষ্টায় আজ আমাদের স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন’।
ফেরদৌস আহমেদ লিখেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ, হবিগঞ্জের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন মহান জাতীয় সংসদে পাশ!!! কৃতজ্ঞতা জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœœ শেখ হাসিনা’। অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি জননেতা অ্যাডভোকেট আবু জাহির এমপি মহোদয়কে’।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী লিখেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন মহান জাতীয় সংসদে পাশ!! চিরকৃতজ্ঞ মাননীয় প্রধানমন্ত্র¿ী বিদ্যানন্দিনী দেশরতœ শেখ হাসিনা। ধন্যবাদ হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার স্নেহভাজন অ্যাডভোকেট আবু জাহির এমপি মহোদয়’।
মঈন উদ্দিন চৌধুরী লিখেন- আলহামদুলিল্লাহ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন মহান জাতীয় সংসদে পাশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার প্রতি চির কৃতজ্ঞ হবিগঞ্জবাসী। অভিনন্দন জানাই জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি আলোকিত হবিগঞ্জের রূপকার আলহাজ্ব এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি মহোদয়কে’।
প্রবাসী মোহাম্মদ শাহজাহান কবির লিখেন- ‘আমি কি এমনিতেই এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপিকে আধুনিক হবিগঞ্জের উন্নয়নের রূপকার বলি। আজকে উনি তা আবার প্রমাণ করলেন। ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর ছিল হবিগঞ্জবাসীর জন্য ঐতিহাসিক দিন। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হবিগঞ্জের বিশাল জনসভায় এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এর দাবির প্রেক্ষিতে ঘোষনা করেছিলেন হবিগঞ্জে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ স্থাপিত হবে। মেডিক্যাল কলেজ ইতিমধ্যে স্থাপিত হয়েছে। দীর্ঘ অর্ধযুগ পর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন জাতীয় সংসদে পাস হলো। আর এই অর্ধযুগ আবু জাহির ভাই হাল ছাড়েননি। এক মন্ত্রণালয় থেকে আরেক মন্ত্রণালয় ফাইল নিয়ে ছুটেছেন। অভিনন্দন আবু জাহির ভাইয়ের প্রতি। এগিয়ে যাক হবিগঞ্জ। এগিয়ে যাক হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এগিয়ে যান এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি’।
অনাথ বন্ধু তরফদার তার স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাস। অভিনন্দন মাননীয় ৩ আসনের এমপি এডভোকেট মোঃ আবু জাহির ভাইকে’।
যুবলীগ নেতা বিপ্লব রায় চৌধুরী লিখেন- হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাশ হওয়ায় প্রিয় মমতাময়ী নেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি হবিগঞ্জবাসী চির কৃতজ্ঞ…’। হবিগঞ্জের উন্নয়নের রূপকার, গণমানুষের নেতা এডভোকেট আবু জাহির এমপি মহোদয়কে জানাই হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা’।
সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসি কবির লিখেন- ‘মহান জাতীয় সংসদে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ হওয়ায় প্রিয় নেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা ও আধুনিক হবিগঞ্জের উন্নয়নের রূপকার এডভোকেট আবু জাহির এমপি মহোদয়কে হবিগঞ্জ সদর উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা’।
হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এটি আমার রাজনৈতিক জীবনের বড় অর্জন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসাবে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যায় আইন সংসদে পাশ করা হয়েছে। এখন আমরা কাজ করব এটি দ্রুত বাস্তবায়ন ও দৃশ্যমান করতে। হবিগঞ্জবাসীর বহু প্রত্যাশিত বিশ্ববিদ্যালয়টি অচিরেই বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ নিউফিল্ডে এক জনসভায় জেলাবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট তিনটি দাবি উপস্থাপন করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। এগুলো হলো, হবিগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা, শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলা বাস্তবায়ন এবং বাল্লা স্থলবন্দর। ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ’। উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে শায়েস্তাগঞ্জ। চলমান রয়েছে বাল্লা স্থলবন্দরের কাজ। অবশেষে ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বিল-২০২০’ পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র চার প্রতিশ্রুতি।