পাঠকের কলাম…
লিটন পাঠান
হবিগঞ্জের মাধবপুরে উন্নত জাতের আখ চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। বিগত পাঁচ বছর থেকে আখ চাষ করে আসছে অনেক চাষি। এই উপজেলায় এক সময় আখ চাষের কোন ছোঁয়া ছিলো না। গত পাঁচ বছর থেকে চিবিয়ে খাওয়া আখ চাষ করতে দেখা গেছে চাষিদের। আখ চিনি ও গুড় তৈরির জন্য প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে মেশিনের সাহয্যে রস করে এবং চিবিয়ে খাওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে আখ ব্যবহার হয়ে থাকে। দেশের প্রায় শতভাগ মানুষের কাছেই চিবিয়ে খাওয়ার অন্যতম প্রিয় হচ্ছে আখ। আখের রসে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, লৌহ, এবং রিবোফাবিন ও ক্যাটরিন বিদ্যামান। এটি অধিক পুষ্টিকর ও উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন হওয়ায় ক্লান্তি বিমোচন এবং তাৎক্ষনিক শক্তি যোগাতে আখের রসের কোন বিকল্প নেই। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, অন্যান্য ফসলের তুলনায় আখের চাষ অধিক পরিমাণে লাভজনক হওয়ায় গত পাঁচ বছর থেকে মাধবপুর উপজেলা জুড়ে দিন দিন আখের চাষ বেড়েই চলেছে। বর্তমানে উপজেলার বাজারগুলোতে দেখা গেছে ব্যাপক হারে আখ বিক্রি। এই আখ ইঞ্জিন চালিত মাড়াইকলে আখের রস ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে এর পাশাপাশি চিবিয়ে খাওয়া থেকেও পিছিয়ে নেই আখ প্রিয় মানুষ। উপজেলা বিভিন্ন বাজারে প্রতিটি আখ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকায়। যা গত বারের চেয়ে পিস প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা করে বেশি। এতে স্থানীয় আখ চাষিরা অনেক লাভবানও হচ্ছেন এবং আখ চাষে বাড়ছে আগ্রহ। উপজেলার আউলিয়াবাদ গ্রামের আখ চাষি শাহজাহান মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে সার, বীজতলা তৈরি, রোপন, পরিচর্যা থেকে শুরু করে আখ কাটা পর্যন্ত খরচ হয় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর একবিঘা জমি থেকে উৎপাদিত আখ বিক্রি করে পাওয়া যায় প্রায় ১লাখ ৩০ হাজার টাকা। তিনি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পরামর্শ নিয়ে তার নিজস্ব জমি ও লিজকৃত প্রায় ৪ বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, সরকারি সহায়তা পেলে আরো বেশি জমিতে আখ চাষ করতে পারবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, চিনি ও গুড় উৎপাদনে ব্যবহৃত আখ থেকে চিবিয়ে খাওয়া আখ নরম, রসালো ও অধিক চিনিযুক্ত। আমাদের দেশে ১৬টি জাতের চিবিয়ে খাওয়া আখের জাত রয়েছে। এর মধ্যে গ্যান্ডারি, বাবুলাল, ঈশ্বরদী ১৮, আচা ফাম, সিও-২০৮, অসৃত, কাজলা, মিশ্রিমালা ও সিও-৫২৭ জাতগুলো অন্যতম। তবে এই উপজেলায় গ্যান্ডারি, বাবুলাল, ঈশ্বরদী ১৮,জাতের আখ চাষ করতে দেখা গেছে। তিনি আরো বলেন, আখ চাষ লাভজন ফসল হওয়ায় চাষিরা দিন দিন আখ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে আখ চাষের পাশাপাশি চাষিরা সাথী ফসল হিসেবে মুগ, মশুর বা সবজি চাষ করলে আরো বেশি লাভবান হবেন। তবে এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চাষিরা লাভের মুখ দেখবেন বলে আশাবাদি।