পাঠকের কলাম
খন্দকার আলাউদ্দিন

শেখ নাজমুল হক চুনারুঘাট থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেছেন এক বছর। যোগদানের পর মাদক সহ বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে সফলতাও পেয়েছেন। সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় চুনারুঘাটে হাত বাড়ালে মাদক পাওয়া। আর মাদকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি জিহাদ ঘোষণা করেছেন। প্রতিদিন মাদক ব্যবসায়ী সহ বড় বড় চালান আটক করা হয়। বর্তমানে জনসাধারণের আস্থা ও ভরসার স্থল হয়ে উঠেছে চুনারুঘাট থানা। সমাজপতিদের কাছে বিচার না পেয়ে সামান্য বিষয় নিয়েও ভুক্তভোগীরা প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন থানায়।
চুনারুঘাটবাসীকে আইনি সহায়তা দিতে জনসাধারণকে আগের চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছেন থানার অফিসার ইন-চার্জ শেখ নাজমুল হক। তবে বিষয়টি তিনি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। আলাপকালে তিনি বলেন, “চুনারুঘাট থানা এলাকা ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। প্রায় ৫ লাখ জনসাধারণের বড় এ উপজেলায় নেই কোনো পুলিশ ফাঁড়ি, নেই তদন্ত কেন্দ্র। সীমান্তবর্তী বিশাল এ উপজেলার আইনশৃংখলার সর্বদিক দেখতে হয় চুনারুঘাট থানাকে। যার ফলে পূর্বের তুলনায় প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আইনী সহায়তা নিতে আসেন। অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে অনেকেই ন্যায্য বিচার পেতে থানায় ভিড় জমান। আমরা বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করি। আর জটিল সমস্যাগুলো আইনী প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাই। ”
তিনি আরো বলেন, “জনগণ যে কোনো ধরণের সমস্যা নিয়ে থানায় আসেন, আমাদের এ ব্যাপারটা দেখে ভালো লাগে যে জনসাধারণ পুলিশকে পজিটিভভাবে নিচ্ছেন। মাননীয় আইজিপি স্যার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েই ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসার স্থল হিসেবে তৈরি হতে হবে।’ বর্তমানে সাধারণ মানুষ চুনারুঘাট থানামুখী হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। থানাবাসীকে আইনী সেবা দেয়ার জন্য আমি রাত ১-২টা পর্যন্তও অফিস করি। ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ এ শ্লোগানকে ধারণ করে আমরা জনগনের সাথে মিশে কাজ করে যাচ্ছি। মাদক নির্মূলের অভিপ্রায়ে গত এক মাসের অভিযানে আমরা ৪৬জন মাদক ব্যবসায়িকে গ্রেফতার করেছি। পরিশেষে আমি প্রত্যাশা রাখি- চুনারুঘাটবাসী যেন কোনো দালালের খপ্পরে না পড়েন। বিভিন্ন প্রয়োজনে সরাসরি যেন বর্তমানের মতো ভবিষ্যতেও আমার কাছে আসেন। সাধারণ মানুষের আইনী সহায়তার জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা।”
প্রতিদিন যতসামান্য বিষয় নিয়ে গ্রাম্য সালিশে সঠিক সমাধান না পেয়ে অহরহ ভূক্তভোগী ভিড় জমান থানায়। বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে থানা-পুলিশ সৃষ্ট সমস্যা নিষ্পত্তি করেন। যার ফলে বর্তমানে চুনারুঘাট থানায় অনেকাংশে মামলা-মোকদ্দমা কমে গেছে।
চুনারুঘাট বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সেক্রেটারি সিদ্দিকুর রহমান মাসুদ জানান, চুনারুঘাট বাজারের বিভিন্ন সমস্যা যেমন : চুরি-ডাকাতি থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে চুনারুঘাট থানার ওসি শেখ নাজমুল হকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি চুনারুঘাট থানায় যোগদানের পর থেকে বাজারে চুরি-ডাকাতি নাই বললেই চলে। তিনি অত্যন্ত আন্তরিক। শুনেছি- প্রতিদিন অনেক মানুষ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে থানায় ভিড় করে। তিনি বিরক্ত না হয়ে দক্ষতার সাথে সমস্যা সমাধান করে দেন।
চুনারুঘাট পৌরসভার কাউন্সিলর মর্তুজ আলী সরদার জানান, ওসি শেখ নাজমুল হক সাধারণ মানুষের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদেরও মূল্যায়ন করেন। তিনি সৃষ্ট যে কোনো সমস্যা দক্ষতার সাথে সমাধান করেন। আমার জানামতে তিনি অনেক দক্ষ অফিসার এবং বিরামহীনভাবে রাত ১-২ পর্যন্তও মানুষকে আইনী সেবা দিতে অফিস করেন।
ওসি শেখ নাজমুল হক যোগদানের পর সকল সরকারি অফিসারদের ইউনিট প্রধানদের সাথে সমন্বয় করেন। যা পূর্বে খুব একটা চোখে পড়েনি। যার ফলে পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল প্রশাসন সমন্বয় করে চুনারুঘাটের আইন-শৃঙ্খলা এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন।