স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গুঙ্গিয়াজুড়ি হাওরের হাজারো কৃষকের ক্ষতিসাধন করা জয়নাল আবেদীন ছালেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুই কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে কৃষকদের পক্ষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ জেলা যুগ্ম জজ ১ম আদালতে মামলাটি দায়ের করে কৃষক মো. শাহ্ আলম।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন- হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন ছালেক দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে গুঙ্গিয়াজুড়ি হাওরের সেচ প্রকল্পটি নিজের দখলে রেখেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তিনি সেচ প্রকল্পের বিদ্যুত বিল পরিশোধ না করায় ১৩ লাখ টাকা বিদ্যুত বিল বকেয়া পড়ে। একের পর এক নোটিশ দেয়ার পরও তিনি বিদ্যুত বিল পরিশোধ না করায় সম্প্রতি পিডিবি কর্মকর্তারা বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। ফলে বিশাল এই হাওরের প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমি আনাবাদি পড়ে রয়েছে। পানির অভাবে নিজেদের জমি চাষ করতে না পারায় রামপুর, গোবিন্দপুর, আওরা, মজলিসপুর ৪ গ্রামের হাজারো কৃষকের মাথায় হাত পড়ে। এই গ্রামের হাজারো কৃষক এক বিঘা জমিও চাষ করতে পারেনি। জমি চাষ করতে না পারায় সারা বছরের খাবার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। পাশাপাশি গবাদিপশুর খাবার সংকটও তীব্র আকার ধারণ করবে। সব কিছু মিলিয়ে ওই চার গ্রামের কৃষকদের প্রায় ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ক্ষতি হবে। পাশাপাশি সারা বছর সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হবে তাদের।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, এ ব্যাপারে ছালেকের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই বিভিন্ন মিথ্যা মামলাসহ হামলা-মারপিট করা হয়। ফলে জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না। পাশাপাশি তার ভাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় তিনি তার অপকর্ম করে সহজেই পার পেয়ে যান।
এ ব্যাপারে কৃষকরা বলেন- আমাদের ছেলে সন্তানদের নিয়ে সারা বছর না খেয়ে থাকতে হবে। তাই এখন আর জীবনের মায়ায় নিরব থাকতে পারতেছি না। কারণ এমনিতেই আমরা না খেয়ে মারা যাব। মিথ্যা মামলা ও মারপিটের ভয় আর করি না। আমরা অসহায় কৃষকরা কোথাও সুষ্ঠু বিচার না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আমরা আশা করি শেখ হাসিনার কৃষিবান্ধব সরকার এর সুষ্ঠু বিহিত করবেন এবং এইসব লোকদের শাস্তি দিয়ে আগামিতে আমাদের কৃষি ও কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখার পথ সুগম করবেন। যাতে আর কোন কৃষককে আমাদের মতো অনাহারে মরতে না হয়। আমরাতো নিঃস্ব হয়ে গেলাম, আমাদের এখন একটাই দাবি ছালেকদের মতো প্রতারকদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।