রায় ঘোষণার পর আসামিদের হাজতে নেওয়ার সময় তারা ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিলে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় ॥ ১৩ আসামির যাবজ্জীবন
নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জে আলোচিত জামায়াত নেতা মুহিবুর রহমান চৌধুরী হত্যা মামলায় জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি শফিকুল আলম চৌধুরীকে আমৃত্যু কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরও ১৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সব আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের হাজতে নেওয়ার সময় তারা ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিলে আদালত প্রাঙ্গণে কিছুক্ষণের জন্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ দ্রুত আসামিদের হাজতখানায় নিয়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৬ জুন হবিগঞ্জ শহরের পুরান মুন্সেফী এলাকায় পূর্ববিরোধের জেরে জামায়াত নেতা মুহিবুর রহমান চৌধুরীকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মুজিবুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ২৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সিআইডি ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক প্রধান আসামী শফিকুল আলম চৌধুরীকে আমৃত্যু কারাদন্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিতরা হলেন- আসামি সেবুল মিয়া, মুকসুদ মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, শহিদুল আলম চৌধুরী আকিক, মুকিব মিয়া, সায়েদ মিয়া, আলমগীর মিয়া, তারা মিয়া, আব্দুল কাইয়ুম, রুবেল, নাহিদ, শামিম ও রতিশ মিয়া। রায়ে বুলবুল মিয়া ও জুয়েল মিয়াকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়। এছাড়া মামলা চলাকালীন সময়ে আসামি আকবর হোসেন, আব্দুল কাইয়ুম ও শাহজাহান মিয়া মৃত্যুবরণ করায় আদালত তাদের অব্যাহতি প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট গুলজার খান জানান, বিচারক আসামিদের উপস্থিতিতে একজনকে আমৃত্যু এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন।