চা শ্রমিক ও তাদের সন্তানদের মুখে হাসি
এম,এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জে চা শ্রমিকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা, দীর্ঘ দুই বছর পরে চালু হয়েছে তাদের বাগান ও স্কুল। এখন ছেলে মেয়েরা লেখা পড়া করতে পারবেন। শ্রমিকরা কর্মজীবি হয়ে উঠেছেন। তারা এখন মহা উৎফুল্ল। গত রবিবার এই ঘোষণা দেন স্বয়ং হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক। নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
জনা যায়, উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের বাওয়ানি চা বাগান বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। দীর্ঘ দুই বছর ধরে বাগানের মালিকানা জটিলতায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এক পর্যায়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাজস্ব খাতে নবীগঞ্জ ইমাম বাওয়ানি চা বাগানের মালিকানা গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই তিনি বাগানটির বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ড. ফরিদুর রহমান বাওয়ানি চা বাগান বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন এবং প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ পান। তখন চা শ্রমিকরা জেলা প্রশাসককে জানান, বেতন-ভাতা দিতে না পারায় কোন শিক্ষক বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে নেই এবং প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ২ বছর ধরে বন্ধ আছে। তখন জেলা প্রশাসক নিজে উপস্থিত চা শ্রমিকদের প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন। সাথে সাথে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন থেকে দ্রুত অস্থায়ী ভিত্তিতে একজন শিক্ষক নিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন দ্রুত অস্থায়ী ভিত্তিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও অর্থায়নে একজন শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করেন।
বাওয়ানি চা বাগানের শ্রমিক নেতা শ্যাম বাবু বলেন, আমরা অনেক খুশি। আজকে আমাদের ছেলে-মেয়ে আবারও লেখাপড়া করতে পারবো এবং আমরা কাজের জন্য বেতন সরকার যথাযথ ভাবে প্রদান করবেন। দুই বছর আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করেনি। আমরা বেতন ভাতা পাইনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রুহুল আমীন জানান, তিনি নিজের উপস্থিতিতে গত ১২ অক্টোবর দীর্ঘ ২ বছর পর উক্ত প্রতিষ্ঠানটি আবার চালু করেন। ফলে বাগানে আবারও লেখাপড়ার পরিবেশ তৈরি হলো। তখন চা শ্রমিক বাচ্চাদের চোখে মুখে দেখা যায় এক অদৃশ্য আনন্দের তৃপ্তির ছাপ। ইউএনও বলেন, বাচ্চাদের সরল হাসি বলে দিচ্ছে আজ তারা কতটা আনন্দিত। অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত চা শ্রমিকের সন্তানরা ফিরে পেলো তাদের মৌলিক অধিকার। চা শ্রমিকরা আজ মহা খুশি। তিনি বলেন, এখন থেকে সরকার চা বাগান ও প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিচালনা করবেন।