মালিকানা পরিবর্তন হওয়ায় ‘অঞ্জলী’ হয়ে যায় ‘মোহন সিনেমা হল’
সততার জন্য অল্প সময়েই স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন সোনাহর হাজী
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ শহর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেক তথ্য দিয়েছেন প্রবীণ ব্যক্তিত্ব রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার ফণি ভূষণ দাস। শহরের আলোচিত ব্যবসায়ী সোনাহর হাজী ওরফে সোনাহর মিয়া সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, হাজী সোনাহর আলী বিস্কুটের দোকানের কর্মচারি ছিলেন। তিনি সিলেটের ওয়াহাব মিয়ার দোকানে কাজ করতেন। স্বাধীনতার পর তিনি হবিগঞ্জ শহরে এসে ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। নিজের কাজের প্রতি একাগ্রতা ও সততার জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি শহরের একজন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তার পুত্ররা আজও সেই সুনাম অক্ষুন্ন রেখে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
তৎকালীন সময়ে হবিগঞ্জ শহরে প্রায় ৮ হাজার মানুষের বসবাস ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহরে বসবাসকারী মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল খুবই মধুর। ধর্মীয় বিভেদ ছিল না। দেখে বুঝার উপায় ছিল না কে কোন ধর্মের। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছিল খুবই মধুর। একে অন্যের আচার অনুষ্ঠানে যেতো। অনুষ্ঠান সফল করতে একে অন্যকে সহায়তা করতো আন্তরিকভাবে। তখন শহরে বিদ্যুৎ ছিল না। বলতে গেলে শহরে বসবাসকারী সকলেই কুপি বাতি ও হারিকেন ব্যবহার করতো।
হবিগঞ্জ শহরে একটিমাত্র সিনেমা হল ছিল। তার নাম ছিল ‘অঞ্জলী’। ‘অঞ্জলী’ সিনেমা হলের মালিক ছিলেন শহরের বাণিজ্যিক এলাকার প্রয়াত কানু চৌধুরীর জেঠা। পরে তিনি ওই সিনেমা হল বিক্রি করে দিলে তা ক্রয় করেন আজমিরীগঞ্জের হাফিজ উদ্দিন ওরফে হাফাই মিয়া। হাফাই মিয়া পরে নাম পরিবর্তন করে সিনেমা হলের নাম দেন তার পুত্র মোহনের নামে। এরপর থেকে সিনেমা হলের নাম হয় ‘মোহন সিনেমা হল’। প্রতিদিন বিকেলে ওই সিনেমা হলে বাংলা গান বাজানো হতো। প্রায় আধ মাইল দূর থেকে সেই গান শোনা যেতো। চলতো সন্ধ্যা পর্যন্ত।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com