স্টাফ রিপোর্টার ॥ জনকরাজ ধান বীজ অঙ্কুরোদগম না হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সূত্র জানায়, চলতি বোরো মওসুমে হবিগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলার অসংখ্য কৃষক জনকরাজ হাইব্রিড ধানের বীজ ক্রয় করেন চারা উৎপাদনের জন্য। কৃষকরা ধান বীজগুলো অঙ্কুরোদগমের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখলেও বীজ অঙ্কুরিত হচ্ছে না। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষক জনকরাজ হাইব্রিড ধান বীজ ক্রয় করেছেন। তারা বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখার ৫ দিনের মাথায়ও অঙ্কুরিত হচ্ছে না। বীজ অঙ্কুরিত না হওয়ায় বীজ তলা তৈরী করতে পারছেন না তারা।
বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের তোফাজ্জল মিয়া জানান, সপ্তাহ খানেক আগে হবিগঞ্জ শহরের একটি দোকান থেকে তিনি ২০ কেজি জনকরাজ ধান বীজ ক্রয় করেন। প্যাকেটগুলো বাড়িতে নিয়ে ৫ দিন পর খুলে দেখেন বীজগুলো পুরাতন দেখা যাচ্ছে। তার পরও তিনি কৃষিবিদদের নিয়ম মেনেই বীজগুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। ২/৩ দিনের মধ্যে বীজগুলো ফুলে উঠতে দেখা গেলেও এ বীজগুলো পানিতে ভেজানোর ৫ দিন পার হবার পরও অঙ্কুরিত হয়নি। পরে তিনি এলাকার আরো কয়েকজন কৃষককে বীজগুলো দেখান। তারা জানান, এ বীজগুলোতে চারা (ধানের হালি) হবে না। পরে তিনি এ বিষয়টি বীজ বিেেক্রতাকে অবগত করেন। তিনি বলেন- শুধু তিনি নয়, তার বড় ভাই আলকাছ মিয়াও ৪ কেজি জনকরাজ ধান বীজ ক্রয় করেছিলেন। তিনিও তার মতো প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে মক্রমপুর গ্রামের এক কৃষক জানান, তিনি ৪ কেজি জনকরাজ ধান বীজ ক্রয় করেন। ভেজানোর পর বীজগুলো অঙ্কুরিত হয়নি। এতে তার ২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। আলমপুর গ্রামের কৃষক ওয়াহিদ মিয়া ৭ কেজি, আতুকুড়া গ্রামের হরকুমার দাস ১২ কেজি, নুরুল আমিন ১৫ কেজি, মক্রমপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়া ১৪ কেজি, উমেদনগর গ্রামের আলতাফ মিয়া ৬ কেজি ও সামছু মিয়া ১৩ কেজি জনকরাজ ধানের বীজ ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু তাদের বীজ অঙ্কুরিত হয়নি। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন আবার এসব কৃষকদের বীজ ক্রয় করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জনকরাজ ধান বীজ ক্রয় না করার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান। অভিযোগ রয়েছে বাজারে ধান বীজের মূল্য ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা হলেও জনকরাজ ধান বীজ ৫শ’ টাকা ধরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে গতকাল হবিগঞ্জ-বানিয়াচং রোডের বীজ ব্যবসায়ী জয়নাল মিয়া ও ভৈরব দাশের দোকানসহ আরো কয়েকটি দোকানে জনকরাজ ধানের পচা বীজ ফেরত আসে। দোকানে গিয়ে পচা বীজগুলো দেখেন বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন হবিগঞ্জ শাখার নেতৃবৃন্দ। তারা এসব বীজ পুরাতন বলে জানান।