স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাট উপজেলার দক্ষিণ নরপতি গ্রামের সিএনজি অটোরিক্সা চালক আব্দুল জলিলকে হত্যার ঘটনায় শায়েস্তাগঞ্জের আলোচিত ইলিয়াছ মিয়া ওরপে ছোটনকে ফাঁসির আদেশ এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আজিজুল হক এই রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণাকালে আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের স্টেনোগ্রাফার মুখলেছুর রহমান জানান, ২০১১ সালের ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় শায়েস্তাগঞ্জ থেকে সিএনজি চালক জলিলকে রিজার্ভ নেয় ইলিয়াছ। বাহুবল উপজেলার ইসলামবাগ গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার উঠানে ভাড়া নিয়ে আব্দুল জলিলের সাথে কথা কাটাকাটি হয় ইলিয়াছের। এক পর্যায়ে আব্দুল জলিলকে ছুরিকাঘাত করে তার নাড়িভূড়ি বের করে দেয় ইলিয়াছ। এতে জলিল ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। জলিলের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ইলিয়াছ পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ জলিল মিয়ার লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই খলিলুর রহমান বাদী হয়ে ওই দিনই বাহুবল থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ ইলিয়াছ মিয়াকে গ্রেফতার করলে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে। বাহুবল থানার এসআই বিশ্বাস মোজাফ্ফর আহমেদ ও ওসি সৈয়দুজ্জামান তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১০ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ৬ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ আদালত উপরোক্ত রায় প্রদান করেন। একই সাথে আসামী চাইলে ১ সপ্তাহের মাঝে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। জরিমানার ৫ লাখ টাকা নিহতের পরিবারকে প্রদানের আদেশ দেন আদালত।
অপরদিকে, ইলিয়াছ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় আলোচিত সুজন হত্যাসহ আরও কয়েকটি মামলার প্রধান আসামি। ২০১৫ সালে ঈদুল ফিতরের দিন হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের ভেতর হবিগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ও বিএনপি নেতা আলহাজ জি কে গউছকে ছুরিকাঘাত করে ইলিয়াছ। এ মামলায় ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই আদালত ইলিয়াছকে দেড় বছর কারাদ-ের আদেশ দেন। ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল সে জামিনে বেরিয়ে এসে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় এক আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় সে চালিয়ে যায় নানা অপকর্ম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ২৫ জুলাই সে শায়েস্তাগঞ্জের দাউদনগর এলাকায় তার নিজ বাড়ীতে চলে আসে। বাড়ীতে আসার এক ঘন্টার মধ্যে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি মোঃ মোবারক হোসেন ভূইয়া তাকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন। ইলিয়াস ওই গ্রামের মৃত সালেহ আহমেদ ওরফে কনাই মিয়ার পুত্র।
রাাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন ও এপিপি অ্যাডভোকেট পারভীন আক্তার বলেন, এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ খুশি। এতে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়েছে। অপরাধীরা ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে সাবধান হবে।