চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংস পরিস্থিতিতে কারফিউ জারি ও সাধারণ ছুটি ঘোষণায় শূন্যের কোটায় পর্যটক হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। এ কয়েকদিনে পর্যটকের হইহুল্লোড় ও সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় স্বস্তিতে বন্যপ্রাণী। এছাড়া চলতি মাস থেকে ৩৫ টাকার টিকেট ১১৫ টাকা করায় এমনিতেই পর্যটক কমে গিয়েছিল।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বন ফাঁকা, গাছ উজাড় হওয়ায় বন্যপ্রাণীর খাদ্য ও বাসস্থান সংকটে পড়েছে। তাছাড়া বনের ভেতর দিয়ে সড়ক পথ থাকার কারণে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে বন্যপ্রাণী। খাবারের সন্ধানে বানর, শূকরসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী লোকালয়েও হানা দিচ্ছে। বানরের উৎপাতে নানা সময়ে পর্যটকরাও আতঙ্কে থাকেন। তবে দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর বন্ধ রয়েছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গেট। পর্যটকদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। সড়কপথে যান চলাচলের পরিমাণও কম। ফলে বন্যপ্রাণীর অবাধ চলাচলে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন।
ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্তদেব বর্মা বলেন, এখন পর্যটক নেই, মানুষের হইহুল্লোড়ও নইে। নিরব নিস্তব্ধ পরিবেশে বন্যপ্রাণী। এটি বন্যপ্রাণীর জন্য স্বস্তির পরিবেশ। তবে সরকারের রাজস্ব আদায় কমে গেলে বন ব্যবস্থাপনায়ও ব্যাঘাত ঘটবে।
এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সাতছড়ি বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গেট বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া পর্যটকরাও আসতে দেখা যায়নি। পর্যটক শূন্য ও যানবাহন চলাচল কম থাকার কারণে বন্যপ্রাণীর মধ্যে স্বস্তিবোধ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু পর্যটক না থাকায় রাজস্ব কমে যাচ্ছে।
২০০৫ সালে সাতছড়িকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণার পর থেকে সেখানে পর্যটকদের ঢল নামছে। বনকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলতে রেস্টহাউস, ইকো-কটেজ, স্টুডেন্ট ডরমিটরি, প্রকৃতি ব্যাখ্যা কেন্দ্র স্থাপনের ফলে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বনের ভেতরে দল বেঁধে মানুষের অবাধ বিচরণ, বন্যপ্রাণীর খাবার সংগ্রহ, বাসস্থান ও চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে খাবারের সন্ধানে জঙ্গলের দুর্লভ প্রাণীগুলো জনপদে ছুটে এসে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের হাতে ধরা পড়ে অথবা গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যাচ্ছিল।