মোঃ মামুন চৌধুরী ॥ চুনারুঘাট উপজেলার লালচান্দ চা বাগানের বিভিন্ন ছড়া থেকে রাতের আঁধারে বালু পাচার করা হচ্ছে। বালু পাচার করে প্রভাবশালীরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। বালু উত্তোলনের ফলে হুমকীতে পড়েছে রাস্তা ও ব্রিজ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের অভিযানের ভয়ে দিনের বেলায় বাগানের ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করা হলেও রাতের আঁধারে পাচার করা হয়। প্রত্যেক রাতে প্রায় ১০ থেকে ২০ ট্রাক্টর বালু পাচার হয়ে থাকে। বাগানের ভুলকিছড়াসহ বিভিন্ন ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রির জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে ট্রাক্টর যোগে বালুগুলো অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করা হয়ে থাকে। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় বাগানের কাঁঠালবাড়ি এলাকায় একটি ব্রিজ ধ্বসে যায়। পরে তা মেরামত করা হয়। একই এলাকায় আরেকটি ব্রিজ হুমকিতে রয়েছে। শুধু ব্রিজ ও রাস্তা নয়, হুকমিতে পড়েছে চা বাগানের টিলাগুলো। ছড়া থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় টিলাগুলো ধীরে ধীরে ধ্বসে পড়ছে। টিলায় টিলায় রয়েছে চা গাছ। টিলা ধ্বসে চা গাছ কমছে।
উপজেলার শানখলা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তা, ব্রিজ হুমকিতে রয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাঁধা দিয়েছি। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু তারপরও একটি প্রভাবশালী চক্র বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি দায়িত্বশীলদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
চা বাগান ব্যবস্থাপক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বালু চুরি বন্ধে তিনি কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। বালু চুরি বন্ধে বাগানের চৌকিদারদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, চা বাগান ও সংরক্ষিত বন আছে বলেই এখন পর্যন্ত হবিগঞ্জের পাহাড় টিকে আছে। এখানে চা বাগানের ভেতর থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। আশা করছি, সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।