তিন বার বিজয়ী হয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হ্যাটট্রিক করলেন আওয়াল ॥ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন কুমকুম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনে আবারও চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৪১৯ ভোট। তার সাথে কাপ পিরিচ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান শামীম। তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৭১৫ ভোট। মোতাচ্ছিরুল ইসলাম প্রথম বার হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে অংশ নিয়ে পইলের সাব খ্যাত সৈয়দ আহমদুল হক এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়ে আলোচনায় আসেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পরাজয় বরণ করেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় টানা ৪ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক। ওই নির্বাচনে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ মোতাচ্ছিরুল ইসলামের কাছে তিনি ৬ হাজার ৯৮৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। বিজয়ী প্রার্থী মোতাচ্ছিরুল ইসলাম পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার ২৮ ভোট। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম পেয়েছিলেন ২০ হাজার ৬৫৫ ভোট। এবারের নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলামের সাথে মূল প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম। যদিও এবার আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়নি। তার পরও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মশিউর রহমান শামীমকে বিজয়ী করতে তার পক্ষে কাজ করেন। এতেকরে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন এবার মশিউর রহমান শামীম বিজয়ী হবেন। কিন্তু গতকাল অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর তাদের সে হিসেব নিকেশ পাল্টে যায়। নির্বাচনী ফলাফলে আবারও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোতাচ্ছিরুল ইসলাম।
তাছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুুবুর রহমান আউয়াল। তিনি টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন ২২ হাজার ৫৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আব্দুর রহমান সেলিম টিয়া পাখি প্রতীকে পেয়েছেন ২১ হাজার ৫১২ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবার নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারলেন না টানা দুইবারের বিজয়ী ফেরদৌস আরা বেগম। তিনি এবার নতুন মুখ সৈয়দ শরীফা আক্তার কুমকুম এর কাছে পরাজিত হয়েছেন। সৈয়দ শরীফা আক্তার কুমকুম কলস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩৯ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। অপরদিকে দুই বারের নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস আরা বেগম ফুটবল প্রতিকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৫৭৮ ভোট। নির্বাচনী ফলাফলে তিনি হয়েছেন তৃতীয়।
চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি অন্যান্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট ঃ মহিবুল ইসলাম শাহীন মোটর সাইকেল ১০ হাজার ২১৭, চৌধুরী নিয়াজ মাহমুদ দোয়াত কলম ৪ হাজার ৫০৫, ওয়াসিম উদ্দিন ঘোড়া ৩ হাজার ৪৫৬, সৈয়দ আশিকুর রহমান হেলিকপ্টার ২ হাজার ৮২২ ভোট। ৭৪ কেন্দ্রে মোট ভোটার ৯১ হাজার ১৩৪ জন। বাতিল ভোট ২ হাজার ৬৩১। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৯৩ হাজার ৭৬৫, শতকরা হার ৪৪.১১%।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে অন্যান্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট ঃ কাজল আহমেদ বই ৫ হাজার ৮৯২ ভোট, কাজী মওলানা আব্দুল কাইয়ূম বৈদ্যুতিক বাল্ব ৫ হাজার ৯৮৮, মোঃ শহিদুজ্জামান শাহীন গ্যাস সিলিন্ডার ২ হাজার ৯১৮, নুরুল হক টিপু চশমা ৫ হাজার ৮৫৩, মোঃ মামুন মিয়া পালকী ৪ হাজার ৪২৮, সারোয়ার হোসেন উড়োজাহাজ ৭ হাজার ৪১৮, সোহাগ চৌধুরী তালা ৮ হাজার ৮৬৯, সালেহ আহমেদ চৌধুরী মাইক ৪ হাজার ৫২৯ ভোট। মোট ভোটার ৮৯ হাজার ৯৭১ জন। বাতিল ভোট ৩ হাজার ৭৫০। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৯৩ হাজার ৭২১, ভোটের হার ৪৪.০৯%।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি অন্যান্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট ঃ নুরুন্নাহার হাঁস ৩০ হাজার ৪৯০ ভোট ও আয়শা খানম রানী প্রজাপতি প্রতিকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৮৪ ভোট। মোট ভোটার ৯০ হাজার ২৫১ জন। বাতিল ভোট ৩ হাজার ৪৯৪। প্রদত্ত ভোট ৯৩ হাজার ৭৪৫, ভোটের শতকরা হার ৪৪.১০%।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ আশিকুর রহমান, ওয়াসিম উদ্দিন, চৌধুরী নিয়াজ মাহমুদ লিংকন তাদের জামানত হারিয়েছেন।