আগুয়া জামে মসজিদে জুমার খুৎবায় সৈয়দ মোবাশ্বির আহমেদ

জাকাতের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র হয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল আগুয়া জামে মসজিদে জুমার খুৎবায় মাওলানা সৈয়দ মোবাশ্বির আহমেদ বলেছেন- আগুয়া গ্রামে একইদিনে ৩ জন মানুষ হত্যাকান্ডের শিকার হলেন। তিন খুনের মধ্য দিয়ে আগুয়া গ্রামে আল্লাহর গজব নাজিল হয়েছে। যারা হত্যার শিকার হলেন এবং যারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদের কেউই সমাজে শান্তির বার্তা দেননি। যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের পরিবারে শূণ্যতা দেখা দেবে। যারা হত্যা করেছেন তাদের একদিন না একদিন বিচার হবে। কেউ সুখে নেই। তাহলে কেন হত্যাকান্ডের মতো জঘন্য কাজে নিজেদেরকে জড়িত করবেন। মাওলানা মোবাশ্বির আহমেদ বলেন- মানবজাতিকে সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহ পাক ফেরেশতাদেরকে নিয়ে বৈঠক করে দুনিয়াতে মানুষ সৃষ্টির পরিকল্পনার কথা জানান। ফেরেশতারা বললেন- দুনিয়াতে মানুষ সৃষ্টি করলে তারা সেখানে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করবে, খুনাখুনি করবে, অশান্তি সৃষ্টি করবে, তোমার গুনগান গাওয়ার জন্য তো আমরাই আছি। আল্লাহ পাক বললেন- আমি যা জানি তোমরা তা জান না। আগুয়া গ্রামে একদিনে ৩টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটল। ফেরেশতাদের আশঙ্কার কথাই ফুটে উঠল। এমন ঘটনায় আল্লাহ পাক ওইসব ফেরেশতাদের কাছে লজ্জিত হন। আমরা নিজেরাই আল্লাহ পাককে লজ্জায় ফেলে দেই অথচ আমরা তা বুঝতেও চেষ্টা করি না। তিনি বিবদমান পক্ষগুলোকে সর্বোচ্চ ধৈর্য্যধারণ করার আহবান জানান।
মাওলানা মোবাশ্বির আহমেদ বলেন- রোযার দিনে কোনো মহিলা বেপর্দাভাবে মার্কেটে গেলেন, তাকে যদি বলা হয়, আপনি রোযা ভেঙে ফেলেন, ওই মহিলা বলবে, রোযা ফরজ, আল্লাহ পাক শাস্তি দেবেন, তাই আমি রোযা ভাঙব না। ওই মহিলাকে যদি বলা হয় নামাজ রোযার মতোই পর্দা করা ফরজ, আপনি বেপর্দায় চলাফেরা করার কারণে ফরজ লঙন করছেন, তখন সে রাগ করবে। পর্দা করা যে অন্যান্য ফরজের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ফরজ তা অনেকে জানেই না। ঘরে বাহিরে সর্বত্র ফরজ পর্দা পালন করতেই হবে। নিজের সন্তানদেরকে ইসলামের শিক্ষা দিতে হবে। তা না হলে আপনি দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। সেই অবহেলার জন্য আপনাকে জবাব দিতে হবে। নিয়মিত জাকাত দিতে হবে। জাকাতের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র হয়। আপনার সম্পদে গরীবের হক হচ্ছে জাকাত। জাকাত তো আপনার সম্পদ নয়। সেটা গরীবের সম্পদ। তা আপনার কাছে থাকবে কেন। তিনি রাসুল (সা.) এর দেখানো পথ অনুসরণের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে আগুয়া গ্রামে দুইপক্ষের টেটাযুদ্ধে কাদির মিয়া, সিরাজ মিয়া ও লিলু মিয়া নামের ৩ কৃষক নিহত হন। শুক্রবার বাদ আসর জানাজার নামাজ শেষে পাশাপাশি কবরে তাদের দাফন করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। হবিগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরের নিবৃত পল্লীতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল জুমার নামাজে স্বল্প সংখ্যক মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন।