স্টাফ রিপোর্টার ॥ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামে স্বামীর ছুরিকাঘাতে ফুলতারা (২৮) নামে প্রাণ কোম্পানীর শ্রমিক মারা গেছেন। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাবার পর মারা যান। এদিকে এখনও তার দুই অবুঝ শিশু মায়ের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আসছে। কখন যে তাদের মা চিপস নিয়ে আসবে। তারা জানেনা তাদের মা পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ অজয় চন্দ্র দেব জানিয়েছেন, ঘাতক মৃত হুরন আলীর পুত্র ফুলতারার স্বামী রফিক মিয়াকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের মকসুদ আলীর স্ত্রী ফুলতারার মা আছিয়া খাতুন জানান, ৮ বছর আগে শেরপুর গ্রামের মৃত হুরন আলীর পুত্র রফিক মিয়া (৩৫) এর নিকট তার মেয়েকে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু রফিক জুয়াড়ি হওয়ায় জুয়ার টাকার জন্য ফুলতারাকে মারধোর করতো। দুই বছর আগে জুয়ার টাকার জন্য ফুলতারাকে মারপিট করে দুইটি সন্তান দিয়ে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়। এরপর দুই শিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে ফুলতারা প্রাণ কোম্পানীতে চাকরি নেয়। এরপরও রফিক তার পিছু ছাড়েনি। তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আদালতে যৌতুকের মামলা করে রফিকের বিরুদ্ধে। এ মামলায় রফিকের ১ বছরের সাজা হয়। পুলিশ তাকে ধৃত করে কারাগারে প্রেরণ করলে কিছুদিন জেল খেটে বেরিয়ে আসে। এরপরই ফুলতারাকে মারার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। মঙ্গলবার ওই সময় প্রাণ কোম্পানী থেকে পিতার বাড়ি ফেরার পথে রফিকের বাড়ির নিকটে পৌঁছামাত্র ছুরিকাঘাত করে। এক পর্যায়ে তার নাড়ি-ভূড়ি বেরিয়ে যায়। লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সিলেট নেয়ার পর ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সে মারা যায়। গতকাল বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে মাগরিবের নামাজের পর পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।