টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবার

এফ আর হারিছ, বাহুবল থেকে ॥ বাহুবলে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে মৃত্যু পথযাত্রী শিশু নিহাদ। সে বাঁচতে চায়। আর তাকে বাঁচাতে সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা চাইল তার পরিবার।
নিহাদ ইসলাম, বয়স মাত্র ১০ মাস। কখনো উঠোন জুড়ে হামাগুঁড়ি দিয়ে এটা সেটা ধরছে, কখনো বা বুকে ভর দিয়ে একটু-আধটু উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। কখনো মলিন মুখে চুপচাপ, আবার কখনো মুখজুড়ে নজরকাড়া হাসি। কিন্তু সন্তানের এমন হাসিমাখা মুখও বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারছে না। ছেলেকে হারানোর অজানা শঙ্কায় বাবা-মাসহ স্বজনদের মুখের হাসি হারিয়ে গেছে।
জানা যায়, বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের মধ্য ভবানীপুর গ্রামের দিনমজুর আজাদ মিয়ার সংসারে সর্বকনিষ্ঠ শিশুপুত্র নিহাদ। ৩ সন্তানের মধ্যে ছোট শিশুপুত্রটি ছেলে হওয়ায় পুরো পরিবারজুড়ে বইছিল খুশির জোয়ার। দিনমজুরের কাজ করে ও পাহাড় থেকে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চালালেও আজাদ মিয়ার সুখের অভাব ছিল। কিন্তু সে সুখের জোয়ারে একদিন নেমে এলো ভাটার টান। বাচ্চা জন্মের ২ মাস পর হঠাৎ তারা জানলেন আদরের সন্তানের হার্ট চিদ্র হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন সিলেট ও হবিগঞ্জে তার চিকিৎসা করেও কোনো সুফল মিলেনি।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঢাকা নিয়ে নিহাদের হার্টের অপারেশন না করালে তাকে বাঁচানো যাবে না। কিন্তু দরিদ্র পিতা-মাতার পক্ষে ঢাকা-তো দূরের কথা, টাকার অভাবে সিলেটে নিয়েই চিকিৎসা করানো দুস্কর।
নিহাদের বাবা আজাদ মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে অভাবের মাঝেও সুখেই ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ কি ঝড় এলো আমাদের জীবনে। চোখের সামনে ধুঁকে ধুঁকে আমার ছেলেটা এভাবে মরে যাবে এটা ভাবলেই বুকটা কেঁপে ওঠে। সন্তানকে চিকিৎসা করাতে স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলেও তাদের কাছ থেকে কোনো রকম আশ্বাস না পেয়ে পাগলপ্রায় হয়ে পড়েছেন তিনি। কান্না জড়িত কন্ঠে আজাদ মিয়া বলেন, আমার বুকের মানিক যেন অকালে হারিয়ে না যায়, সে জন্য দয়া করে আপনারা একটা কিছু করেন। মানুষ তো চা-পান খেয়েও কত টাকা নষ্ট করে। সে টাকাটা দিলেও আমার লক্ষ্মীসোনাটা বেঁচে যাবে। তিনি তার সন্তানকে বাঁচারে সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।