আজ সকাল ১১টায় লস্করপুর শাহী ঈদগাহে মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে
মোঃ মামুন চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক লেদু মিয়া (৮৫) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। রবিবার বিকেলে তিনি সিলেট মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রী, আত্মীয় স্বজনসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় লস্করপুর শাহী ঈদগাহে মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
জানা যায়, আব্দুল মালেক লেদু মিয়া পাকিস্তানী আনসার কমান্ডার ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে তিনি বাড়িতে চলে আসেন। দেশের মায়ায় আর কর্মস্থলে ফিরে যাননি। একাত্তরের ২৫ মার্চ যুদ্ধে অংশগ্রহন করতে তিনি বাড়ি থেকে হবিগঞ্জ শহরে যান। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা আলীর নেতৃত্বে ট্রেজারির অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র লুট করেন। পরে শেরপুর ও সাদিপুরের সম্মুখ সমরে অংশ নিতে তিনিসহ তার সঙ্গীরা রওনা হন। পথে রাত হলে রশিদপুর চা বাগানের বাংলোয় তারা রাত্রী যাপন করেন। সেখান থেকে তারা ৭০-৮০ জন রওনা দিয়ে শেরপুর ও সাদিপুর সম্মুখ সমরে অংশ নেন। তুমুল লড়াইকালে শহীদ হন মহফিল হোসেন ও হাফিজ উদ্দিনসহ দুইজন। সেখান থেকে তিনিসহ সহযোদ্ধারা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে লিচু বাগানে অবস্থান নিলে ঘটনাস্থলে জীপ নিয়ে আসেন ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান। তাৎক্ষণিক ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের নির্দেশে এ গাড়িটি নিয়ে ভারতের আসারাম বাড়ি ক্যাম্পে যান। দেড় মাস প্রশিক্ষণ শেষে বাঘাই ক্যাম্পে অবস্থান নেন। সেখান থেকে ৩নং সেক্টর প্রধান মেজর কেএম শফি উল্লাহ’র নেতৃত্বে সাব-সেক্টরের ক্যাপ্টেন আজিজ ও কমান্ডার সুবেদার শামসুল হুদার দিকনির্দেশনায় কালেঙ্গায় সম্মুখ সমরে অংশ নেন তিনি। এভাবে তিনি বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন। তুমুল লড়াইয়ের ফলে পাক সেনারা পালিয়ে গেলে সিলেটে গিয়ে সুবেদার শামসুল হুদার কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে জয়ী হয়ে বাড়ি ফিরেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক লেদু মিয়া।
মরহুমের বড় ছেলে মোঃ আব্দুস ছালেক দুলাল বর্তমানে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার ওসি হিসেবে কর্মরত। অপর ছেলে লস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ হেলাল মিয়া সমাজসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।