স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা দুটি মামলার মধ্যে বিস্ফোরক মামলায় জামিন পেয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম সেলিম। একই ঘটনায় দায়েরকৃত পুলিশ এসল্ট মামলায় তাকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে। রবিবার হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসাইন এর আদালতে জামিন আবেদন করেন জহিরুল ইসলাম সেলিম। জামিন শুনানির জন্য কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জহিরুল ইসলাম সেলিমকে হবিগঞ্জ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট শুনানি শেষে বিস্ফোরক মামলায় জহিরুল ইসলাম সেলিমের জামিন মঞ্জুর করেন এবং পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে পুলিশ এসল্ট মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়। তিনি এই দুই মামলায় গত ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন।
সূত্র জানায়, গত ১৯ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল। ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর ঈদগার সামন থেকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছের নেতৃত্বে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি। শায়েস্তানগরস্থ বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে পদযাত্রা কর্মসূচি শেষ হয়। এ সময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে প্রধান সড়ক ছেড়ে ভিতরের রাস্তায় চলে যেতে বলে। কিন্তু হাজার হাজার লোক সমাগম হওয়ায় ভিতরের রাস্তায় জায়গা না হওয়ায় নেতাকর্মীরা প্রধান সড়কে অবস্থান করছিলেন। এ সময় নেতাকর্মীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করে। এতে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। এছাড়াও সদর থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব সহ কয়েক পুলিশ সদস্য আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকশ রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। পরিস্থিতি বেগতিক হলে পুলিশ রায়ট কার এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আলহাজ্ব জি কে গউছকে প্রধান আসামী করে বিএনপির ১২শ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট ও বিস্ফোরক আইনে ২টি মামলা দায়ের করা হয়। গত ২১ আগস্ট সদর থানার এসআই ওয়াহেদ গাজী বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও এসআই খুর্শেদ আলম বাদী হয়ে পুলিশ এসল্ট মামলাটি দায়ের করেন।